কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে জনবল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ
১২ জুন ২০২০ ০৮:৩৩
কুড়িগ্রাম: টেন্ডার জালিয়াতির ঘটনার পর জনবল নিয়োগেও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, মনোনীত ঠিকাদারের অগোচরে হাসপাতালের চিহ্নিত একটি চক্র গোপনে এই নিয়োগ শেষ করার পাঁয়তারা করছে।
এর আগে, গণমাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ, স্টেশনারি ও নন-স্টেশনারি মালামাল সরবরাহের টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাপের মুখে ওই টেন্ডার বাতিল করে।
জনবল নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২৯ জন ক্লিনার ও সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগের টেন্ডার শেষ হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০ জন ক্লিনার ও ৯ জন সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগের দায়িত্ব পায় রংপুরের স্বরলিপি সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। চূড়ান্ত দরদাতা হিসাবেই তারা মনোনীত হয়েছিল। কিন্তু মনোনীত ঠিকাদারের অগোচরে হাসপাতালের চিহ্নিত একটি চক্র গোপনে নিয়োগপ্রার্থীদের কাছ থেকে এক বা দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিষয়টি টের পেয়ে রংপুরের স্বরলিপি সিকিউরিটি সার্ভিসেসের মালিক রেজাউল করিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চুক্তিনামা দাবি করেন। এরপর কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাকিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চুক্তিনামার পত্র গত ৩ জুন স্বরলিপি সিকিউরিটির মেইলে পাঠানো হয়। একই মেইলে তিনি কার্যাদেশের পত্রটিও পান।
চুক্তিনামা করা ছাড়া এবং ১৪ দিন পরে ইস্যুকৃত পত্র পাওয়ায় ঠিকাদার বিস্ময় প্রকাশ করে অসঙ্গতি দূর করে নতুন চুক্তিনামা সম্পাদন ও কার্যাদেশ প্রাপ্তির লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর একই তারিখে স্বাক্ষরকৃত পত্র গত ৪ জুন হাসপাতালে জমা দেন ও মেইলেও পাঠান।
স্বরলিপি সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী লিখিত অভিযোগে জানান যে, তার স্বাক্ষর, সিলমোহর, প্যাড জাল করা হয়েছে। তিনশত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কোনো চুক্তি করেননি এবং জামানতের ৪৭ হাজার টাকার পে-অর্ডারও দেননি।
অভিযোগ রয়েছে, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আশরাফুল মজিদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট পরিচালিত হয়। প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আশরাফুল মজিদ ও জেলা যুবলীগের এক নেতার যোগসাজসে মূল ঠিকাদারকে পাশ কাটিয়ে আউটসোর্সিংয়ের এই ২৯ জন জনবল নিয়োগ দিতে চেষ্টা করছে।
তবে আশরাফুল মজিদ এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন এবং বিষয়টিকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাকিরুল ইসলামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনিও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। প্রকৃত ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিনামা ছাড়া কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়েও কিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
জনবল নিয়োগের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার স্বরলিপি সিকিউরিটির স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম বলেন, ‘বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সব বিষয় লিখিত আকারে অবহিত করেছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
কার্যাদেশ কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল চুক্তিনামা টেন্ডার জালিয়াতি দুর্নীতি স্বরলিপি সিকিউরিটি