‘এই বাজেট করোনা সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার বাস্তব দলিল’
১২ জুন ২০২০ ১৩:৪৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে কয়েক মাস ধরে বিপর্যয়ের পরেও আমাদের বাজেটের আকার কমেনি বরং বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১১ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক অগ্রগতির সুফল এই বাজেট। করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা, মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ রেখেই সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জুন) বাজেট উপস্থাপনের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের বাজেট ভিন্ন বাস্তবতায়, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রণীত। এ বাজেট করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার দলিল। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে সংকটকালীন ও সংকট পরবর্তী সম্ভাব্য অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গতিপথ নির্ণয়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রণীত হয়েছে এবারের বাজেট। যা জীবন-জীবিকার মধ্যে ভারসম্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসনা সরকারের সময়োচিত সাহসী চিন্তার ফসল। গতানুগতিক ধারার সাথে আউট অব বক্স চিন্তার সমন্বয় করে সংকট জয়ের নবউদ্যোম সৃষ্টিতে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে জনকল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের পর ইতোমধ্যে যে অর্থনৈতিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তাতে একটি অন্তবর্তীকালীন বাজেট বলা যেতে পারে। গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল শতকরা ৮ দশমকি ২ ভাগ থেকে ৮ দশমিক ৩ ভাগ। কোভিড-১৯ পরবর্তী উত্তরণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সাথে সামাঞ্জস্য রেখে এবারের বাজেট জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। অনেকে এটাকে উচ্চাভিলাষী মনে করতে পারেন। তবে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি। এই প্রত্যাশা পূরণে যত ঝুঁকি নিতে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নেবেন।’
কাদের বলেন, ‘করোনার কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতে রাজস্ব আয় হ্রাস পেয়েছে। ফলে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গত অর্থবছরে ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা থেকে ২৯ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা হ্রাস করে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিবর্তী সময়ে এই পরিস্থিতিতে সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, আমাদের জাতীয় আয়-ব্যয় নির্দিষ্ট থাকবে কী না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা পরিবর্তন হতে পারে। সে কারণে এটিকে একটি ফেক্সিবল ডকুমেন্ট হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রথম বছর। সতরাং এ বাজেট তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিকতর গুরুত্ব পাবে। এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যখাতকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘বাজেট ঘোষণার সঙ্গে কোনো ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ না করেই বিএনপি আগে ভাগে প্রস্তত করা ও মনগড়া, পুরনো ও গতানুগতিক গল্পের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিএনপি নেতারা গত ১১ টি বাজেট ঘোষণার পর বাজেট নিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন এবং বরাবরই বলেছেন বাজেট বাস্তবায়ন হবে না; অর্থনীতি মুখথুবড়ে পড়বে এ ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এবারও তারা সংকট জয়ের সুপরিকল্পিত কর্মোদ্যোগ এই বাজেটের বিরুদ্ধে চিরায়ত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস নতুন অর্থবছর বাজেট