Sunday 29 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রত্যাশিত বরাদ্দ হয়নি’


১৩ জুন ২০২০ ১৭:৪৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবলে বিপর্যন্ত গোটা পৃথিবীর অর্থনীতি। বর্তমান এমন পরিস্থিতির আলোকে বাংলাদেশের এবারের বাজেট একটু ভিন্ন রকম হবে বলে প্রত্যাশা ছিল, কিন্ত তা হয়নি। এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাত ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হয়েছে, বলে মন্তব্য করেছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

শনিবার (১৩ জুন) গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম আয়োজিত ‘২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাজেট পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এবারের বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে সুপরিকল্পিতভাবে চিন্তা-ভাবনা করে বরাদ্দ করা হয়নি উল্লেখ করে ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘এবারের বাজেট বতর্মান পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। করোনার এই সময়ে যে ধরনের বাজেট হওয়া উচিত ছিল সে রকম বাজেট হয়নি। এবার আমরা একটু ভিন্ন রকম বাজে প্রত্যাশা করেছিলাম।’

বিজ্ঞাপন

সঙ্গতিপূর্ণ কেন হয়নি তার ব্যাখা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমেই বলবো আমরা যদি স্বাস্থ্যখাতের দিকে তাকাই, দেখবো তার কি বেহাল দশা। এই অবস্থা, একদিনের ঘটনা নয়। এটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। এটা সামগ্রিক পরিস্থিতি। এর থেকে উত্তোরণে, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এ খাতে যা বরাদ্দ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যদিও স্বাস্থ্যখাতে ১৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তার সঙ্গে সমর্থন করছি কিন্তু এ খাতের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা এক ধরনের একটা যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে খুব দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটি আমরা কাজে লাগাইনি।’

ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘এখন যদি কোনো দেশ করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে। তারা যদি সেটি বাজারজাত করে। তাহলে সেটি আমরা ফ্রি পাব তার কোনো নিশ্চয়তা আছে? কিন্তু এই বাজেটে সেটির প্রতি দৃষ্টি রেখে কোনো ধরনের বরাদ্দ বা সুযোগ সৃষ্টি করা হয়নি।’

আরেকটি বিষয়টি হলো বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বরাদ্দ করা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতে বেসরকারি হাসপাতালের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। কিন্ত সরকারেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের তদারকি ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করতে পারতো। আমরা দেখছি অনেক রোগী আইসিইউ’র অভাবে রাস্তায় মারা যাচ্ছে। অথচ দেখা যাবে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ খালি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার কম করে হলেও ছয় মাসের জন্য সেটি গ্রহণ করতো পারতো। বাজেটে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

এ বাজেটে বড় ঘাটতির যে বিষয়টি রয়েছে সেটি হলো বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারাচ্ছেন। এই বাজেটের চাকরিহারা বা বেকারদের বিষয়ে একটা কিছু বরাদ্দ রাখা উচিত ছিল। সামাজিক সুরক্ষার কর্মসূচির আওতায় এটি করা যেত। তা করা হয়নি। এই বাজেটের আরও একটি বড় গ্যাপ আমরা দেখছি সেটি হলো, বাজেটে যে ধরনের রেভিনিউর লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না। প্রশ্ন হলো যে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না সেই ধরনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে কেন? এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

এ রূপ গতানুগতিক বাজেট আমরা চায়নি। এবারের বাজেট হওয়া উচিত ছিল সুপরিকল্পিত।

তারপরও বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলোর চাপ থাকা প্রয়োজন। তা না হলে আমাদের অর্থনীতি আগাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের অর্থনীতির বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশাসহ প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা।

করোনা টপ নিউজ বাজেট সানেম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর