Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোভিড-১৯: চীনকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ, বিশ্বে ১৮তম


১৩ জুন ২০২০ ১৯:০৭

যে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়ার পর গোটা বিশ্বকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯), আক্রান্তের সংখ্যায় সেই চীনকেই এবার ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। চীনের থেকে এখন বাংলাদেশে এই ভাইরাসে এক হাজার ৩০৪ জন বেশি আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। চীনকে অতিক্রম করার মাধ্যমে সব দেশের তালিকাতেও বাংলাদেশ ১৮তম স্থানে উঠে এসেছে।

শনিবারের (১৩ জুন) কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে জানানো হয়, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ হাজার ৮৫৬ জন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ৮৪ হাজার ৩৭৯ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলেন। অন্যদিকে, এদিন ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭৫ জন। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। চীনে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৩৪ জন এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। বাংলাদেশে এই সংখ্যা ১ হাজার ১৩৯।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৪৪ জনের, শনাক্ত ২৮৫৬

অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি শনাক্ত হন। সে হিসাবে ৯৮ দিনের মাথায় এসে আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে অতিক্রম করে গেল বাংলাদেশ। কেবল চীন নয়, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেলজিয়াম, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশরের মতো দেশগুলোকেও বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে। আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের মধ্যে ১৮তম দেশ।

আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় যোজন যোজন এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ২১ লাখ ১৭ হাজার। ব্রাজিলে এই সংখ্যা ৮ লাখ ২৯ হাজার ও রাশিয়ায় ৫ লাখ ২০ হাজারের চেয়েও বেশি। চতুর্থ স্থানে থাকা আমাদের প্রতিবেশী ভারতে ৩ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

করোনায় আক্রান্ত শীর্ষ ১০ দেশের বাকি দেশগুলো হলো— যুক্তরাজ্য (২ লাখ ৯২ হাজার ৯৫০), স্পেন (২ লাখ ৯০ হাজার ২৮৯), ইতালি (২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৫), পেরু (২ লাখ ২০ হাজার ৭৪৯), জার্মানি (১ লাখ ৮৭ হাজার ২৫১), ও ইরান (১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৫)।

আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশের ওপরে থাকা বাকি দেশগুলো হলো— তুরস্ক (১ লাখ ৭৫ হাজার ২১৮), চিলি (১ লাখ ৬০ হাজার ৮৪৬), ফ্রান্স (১ লাখ ৫৬ হাজার ২৮৭), মেক্সিকো (১ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৬), পাকিস্তান (১ লাখ ৩২ হাজার ৪০৫), সৌদি আরব (১ লাখ ১৯ হাজার ৯৪২) ও কানাডা (৯৭ হাজার ৯৪৩)। সব মিলিয়ে সারাবিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬০১ জন।

আরও পড়ুন- মৃত্যুহার বাড়ছেই: জুনেই প্রাণ হারাতে পারেন দেড় হাজার মানুষ

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ২৮ হাজার ৭৫৩ জন মারা গেছেন। মৃত্যুর সংখ্যাতেও শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৩১ জন মারা গেছেন এই ভাইরাসে, যা বিশ্বের মোট মৃত্যুর ২৭ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্য— এই দুই দেশেই ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন ইতালিতে, ফ্রান্সে এই সংখ্যা ২৯ হাজারের বেশি, স্পেনে ২৭ হাজারের বেশি। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষ দশের বাকি দেশগুলো হলো— মেক্সিকো (১৬ হাজার ১৩৬), বেলজিয়াম (৯ হাজার ৬৫০), ভারত (৮ হাজার ৮৯৫) ও জার্মানি (৮ হাজার ৮৬৩)। বাংলাদেশ এই তালিকার ৩১তম স্থানে রয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরের চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর একে একে চীনের প্রায় সব প্রদেশেই ছড়ায় এই ভাইরাস। জানুয়ারি শেষে চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৭২০ জন। ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণের হার ছিল আরও অনেক বেশি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ আক্রান্ত হন ওই মাসে। ফেব্রুয়ারি শেষে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৩৯৪ জনে।

এরপর অবশ্য চীনে সংক্রমণের গতি যথেষ্ট ধীর হয়ে আসে। মার্চ, এপ্রিল ও মে ও জুনের প্রায় অর্ধেক পেরিয়ে দেশটিতে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭৫ জন। এর মধ্যে বেশকিছু দিন দেশটিতে নতুন কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল চীন সরকার। তবে গত কিছুদিন দেশটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।

চীনের পর ধীরে ধীরে সব দেশেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বলতে গেলে গোটা বিশ্বকে স্থবির করে দেয় এই ভাইরাস। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। এর মধ্যেই গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। গোটা মার্চে শনাক্ত হন মোট ৫১ জন। এপ্রিলে সে সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৬১৬। মে মাসে সংক্রমণের তীব্রতা ছিল আরও বেশি, এপ্রিল মাসের পাঁচ ‍গুণেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হন। সংখ্যার হিসাবে তা ৩৯ হাজার ৪৮৬ জন। আর জুনের অবস্থা আরও ভয়াবহ। এ মাসের প্রথম ১৩ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা গোটা মে মাসের প্রায় সমান— ৩৭ হাজার ২২৬ জন! আর এদিনই আক্রান্তের সংখ্যায় উৎপত্তিস্থল চীনকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ।

করোনাভাইরাস করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোভিড-১৯ চীনকে ছাড়িয়ে গেল বিশ্বে ১৮তম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর