Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আমার নিরাপত্তায় যারা কাজ করে তাদের জীবনও ঝুঁকিপূর্ণ’


১৫ জুন ২০২০ ১৪:৫৩

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মনে করি আমার সাথে যারা কাজ করেন বা আমার নিরাপত্তায় যারা; তাদের জীবনটাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের এএসএফের প্রতিটা সদস্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে থাকে।

সোমবার (১৫ জুন) এসএসএফ এর ৩৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান গণভবন থেকে ভিডিও কনাফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

কয়েক খণ্ডে প্রকাশিত জাতির পিতার সিক্রেটস ডকুমেন্টস গ্রন্থটি এএসএফের সকলের পড়া উচিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি যারা এই নিরাপত্তা সঙ্গে কাজ করেন তাদেরকে এই সম্পর্কে একটু জানা দরকার। সেই সময়ে গোয়েন্দা সংস্থা কীভাবে তারা কাজ করতো, অনুসরণ করত এবং এখানে অনেক খবরও জানা যায়।’

‘প্রকৃতপক্ষে আমরা বাংলাদেশ যে স্বাধীন; এই স্বাধীনতার ইতিহাসটা কিন্তু ওই গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসে। তিনি (শেখ মুজিবুর রহমান) ধীরে ধীরে কিভাবে একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এবং তারই ডাকে সাড়া দিয়ে এই বাঙ্গালী অসহযোগ আন্দোলন থেকে সশস্ত্র বিপ্লব করে দেশটাকে স্বাধীন করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করি।’

স্বাধীন রাষ্ট্রকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন এবং ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার যে ষড়যন্ত্র তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর একের পর এক ক্যু হয়েছে। সেই সময় বাংলাদেশে ১৯ টা ক্যু হয়েছে। এরকম একটা দুর্বিষহ অবস্থা ছিল।’

‘৬ বছর বিদেশে ছিলাম আসতে পারিনি। নিষিদ্ধ ছিলাম। বাংলাদেশের মানুষ যখন আমাকে বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমার অনুপস্থিতিতে সভাপতি নির্বাচিত করে তখন এক প্রকার জোর করে আমি দেশে ফিরে আসি এবং সারা বাংলাদেশ ঘুরি। আমারও লক্ষ্য, এই বাংলাদেশের মানুষের ক্ষুধা নিশ্চিত করা, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জন্য একটা সুন্দর জীবন দেওয়া, যেখানে কোন শোষণ বঞ্চনা থাকবে না শিক্ষা-দীক্ষায় জ্ঞান-বিজ্ঞানে এই জাতি সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। বিশ্ব দরবারে মর্যাদা নিয়ে চলবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে যেয়ে প্রতি পদে পদে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। এটা ঠিক কিন্তু বাধা অতিক্রম করেই চলতে হয়েছে।এটা খুব স্বাভাবিক, আমি জানি। এ জন্য জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি মনে করি আমার সাথে যারা কাজ করেন বা আমার নিরাপত্তায় যারা; তাদের জীবনটাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের এএসএফের প্রতিটা সদস্য আমি দেখেছি অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে থাকে। সে জন্য সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি সকলের জন্য দোয়া করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজকে সেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা করতে পারছি। আর এই ডিজিটাল করেছিলাম বলেই করোনাভাইরাস নামে এই যে একটা ভাইরাস সারাবিশ্বকে একেবারে স্থবির করে দিয়েছে তারপরও আমরা আমাদের দেশের মানুষের সেবা করতে পারছি। তাদের জন্য কাজ করতে পারছি। তাদের চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে আর্থিক সব ধরনের সুবিধা সুযোগ আমরা দিতে পারছি। সেহেতু সত্যিই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সে দিক থেকে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। এটা আমাদের আনন্দের বিষয় আরেকদিকে দুঃখের বিষয় হল যারা প্রতিনিয়ত ও আমার জন্য কাজ করেন আমি তাদের কাছে যেতে পারছি না আমাকে দূরে থেকে কথা বলতে হচ্ছে এটা হচ্ছে সব থেকে কষ্টের। তারপরও আমি বলব সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সেটাই আমি কামনা করি।’

এএসএফের সদস্যদের তার সরকারের মেয়াদে নানারকম সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘যাকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে শুধু তারই নিরাপত্তা না। যারা নিরাপত্তা দেবে তাদেরটাও আমাদেরকে চিন্তা করতে হয়, সেটা যদি চিন্তা না করতাম তাহলে হয়তো এই গুলি আমি কিছুই মেনে নিতাম না। এটা হলো বস্তবতা।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী সিলেটের সাবেক মেয়র কামরাণের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমাদের কামরান মারা গেল। কামরান দু্ইবার গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিল। ওইসময় কামরানের বেঁচে যাওয়াটা ছিল মিরাক্কেল। এবারে তাকে করোনাভাইরাসে মৃত্যু বরণ করতে হলো, এটা অত্যন্ত কষ্টের। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুঃখের কথা বলে তোমাদের কষ্ট দিতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আমি চাই তোমাদের প্রশিক্ষণটা অব্যাহত থাকুক, অব্যাহত রাখতে হবে। নিজেকে সুরক্ষিত করতে হলে অথবা ভিআইপিদের সুরক্ষাতার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যতটা করার আমি প্রতিনিয়ত করছি। তোমাদের আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষায় তৈরি হতে হবে।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে মাওলানা হাফেজ মো. সোলায়মান কোরআন তেলাওয়াত করেন এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান।

করোনাভাইরাস সংকটে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এএসএফ’র সদস্যদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জল হোসেন ত্রাণ তহবিলের চেক গ্রহণ করেন। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেজর ফাহাদ।

এসএসএফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সালমান শাহ্‌ স্মরণে মিলাদ মাহফিল
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৩

নাফ নদীর মোহনায় ২ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৯

সম্পর্কিত খবর