৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন করোনা পজিটিভ-নেগেটিভ সনদ, গ্রেফতার ৪
১৬ জুন ২০২০ ০০:৪৩
ঢাকা: দৃশ্যমান উপসর্গ নেই, কিন্তু নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ এসেছে। অথচ চাকরি বাঁচাতে বা অন্য প্রয়োজনে দরকার নেগেটিভ রিপোর্ট। আবার অফিস-আদালতে যোগ দিবেন না, বা সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধার আশা করছেন, এমন ব্যক্তিরা চান করোনা পজিটিভ রিপোর্ট। এই দুই ধরনের মানুষের চাহিদা মেটাতে রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালিয়াত চক্র। যারা টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস নেগেটিভ-পজিটিভ রিপোর্ট বা সনদপত্র দেওয়ার অফিস খুলে বসেছে।
চাহিদা অনুযায়ী মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ভুয়া প্যাডে দেওয়া হচ্ছে করোনার ভুয়া সনদ। রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া সনদসহ এমনই এক জালিয়াত চক্রের চার জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতার চারজন হলেন- ফজল হক (৪০), শরিফ হোসেন (৩২), জামশেদ (৩০) এবং লিয়াকত আলী (৪৩)। এসময় তাদের কাছ থেকে শতাধিক করোনার ভুয়া সনদপত্র, দু’টি কম্পিউটার, দু’টি প্রিন্টার এবং দু’টি স্ক্যানার উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রকিবুল হাসান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সীমিত পরিসরে সকল প্রকার অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে করোনার দৃশ্যমান উপসর্গবিহীন ব্যক্তিরা করোনা টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পরও ভুয়া নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিভিন্ন অফিস-আদালতে যোগদান থেকে বিরত থাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করছেন এবং অনেকেই আবার সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা পেতে ভুয়া পজিটিভ সনদ নিচ্ছেন। টাকার বিনিময়ে ওই ভুয়া নেগেটিভ-পজিটিভ সনদ দিচ্ছে এ ধরনের জালিয়াত চক্র।
তিনি বলেন, ভুয়া সনদপত্রের রমরমা ব্যবসার ফাঁদ পাতার বিষয়টি র্যাব-৩ গোয়েন্দা সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরে রাজধানীতে নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় মুগদা এলাকা থেকে সোমবার দুপুরে করোনার ভুয়া সনদ প্রস্তুত ও বিক্রয়কারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই জালিয়াত চক্রটি এরই মধ্যে দেড় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে করোনার ভুয়া নেগেটিভ ও পজিটিভ সনদ দিয়েছে। আরও শতাধিক লোককে ভুয়া সনদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাঁচ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়েছে চক্রটি।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের কোনো কর্মচারী এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সেটা খতিয়ে দেখছি। তবে চক্রের সদস্যরা যেটি করেছে সেটা হচ্ছে, মুগদা হাসপাতাল থেকে দেওয়া করোনা রোগীর রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে তা স্ক্যান করে সেখানে নাম বসিয়ে বিক্রি করে। যাদের নেগেটিভ সনদ দরকার তাদের নেগেটিভ বা যাদের পজিটিভ সনদ দরকার তাদের কাছে তাই বিক্রি করছিলো তারা ।
গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে মুগদা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।