Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের শুল্ক বৃদ্ধি: বাড়ছে বাইসাইকেলের দাম!


১৮ জুন ২০২০ ০১:১৬

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশে নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপ করায় আমদানিকৃত ও স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সব ধরনের বাইসাইকেলের দাম বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ থেকে দেড়শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূলোর বাইসাইকেল রফতানি করা হয়। পাশাপাশি অভ্যান্তরীণ চাহিদা পূরণে একটা বড় অংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বাইসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানিকৃত ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশে শুল্ক বাড়ানোর ফলে এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, প্রতিবছর বাংলাদেশে ১০ থেকে ১২ লাখ বাইসাইকেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ছয় লাখের বেশি বাইসাইকেল স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। অবশিষ্ট বাইসাইকেল আমদানি করা হয়। আমদানিকৃত বাইসাইকেলের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে চীন ও ভারত থেকে। কিন্তু সাইকেলের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বাইসাইকেল ও আমদানিকৃত বাইসাইকেল উভয়ের দাম বৃদ্ধি পাবে। এই অবস্থায় পরিবেশবান্ধব বাইসালের বিভিন্ন ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ বাইসাইকেল মার্চেন্টস অ্যাসেম্বলিং অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিবিএমএআইএ) সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর ইসলাম জাহিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাইসাইকেল সাধারণত নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা ব্যবহার করেন। পরিবেশবান্ধব কোনো যানবাহন থাকলে তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে বাইসাইকেল। বর্তমানে করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের ক্ষেত্রে সাইকেলের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে বাইসাইকেলের যন্ত্রাংশের ওপর ৫ শতাংশ সম্পুরক শুল্ক বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও বাইসাইকেলের টিউব টায়ারসহ প্রতিটি আইটেমেই আলাদা করে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত উভয় ক্ষেত্রেই বাইসাইকেলের দাম বেড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বাইসাইকেলের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ আমদানিতে প্রতি কেজিতে শুল্ক ১ দশমিক ৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ ডলার করা হয়েছে। অবার বিভিন্ন ধরনের টায়ারে প্রতি কেজি শুল্ক ২ দশমিক ৬ ডলার তেকে বাড়িয়ে ৩ ডলার করা হয়েছে। এভাবে সব ধরনের যন্ত্রাংশে শুল্ক বাড়ানো হযেছে। আমরা তা পুনর্বিবেচনার দাবি করছি।’

আরও পড়ুন: করোনায় ভরসা বাইসাইকেল

সূত্র জানায়, ‘বাইসাইকেল অমদানির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে বাইসাইকেল উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্রাণ আরএফএল, মেঘনা গ্রুপ, সিরাজ বাইসাইকেল লিমিটেড, এইস বাইসাইকেল লিমিটেড, জার্মানি-বাংলাদেশ বাইসাইকেল, নর্থ বেঙ্গল সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, ট্রান্সওয়ার্ল্ড বাইসাইকেল কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় বাজারে বাইসাইকেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপসহ বেশ কয়েকটি দেশে পণ্যটি রফতানি করছে। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে সাইকেল রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এ তালিকায় প্রথমে রয়েছে তাইওয়ান, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কম্বোডিয়া।’

সূত্র জানায়, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাইসাইকেল রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১২৬ মিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই আয় কিছুটা কমলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউরোপে বাইসাইকেল রফতানি বেড়েছে ৯ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাইসাইকেল রফতানি হয়েছে ৮৪ মিলিয়ন ডলার। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এর রফতানি পরিমাণ অনেক বাড়বে বলেও জানা গেছে।

অন্যদিকে সিরাজ বাইসাইকেলের সত্ত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করায় সব ধরনের বাইসেকেল দাম গড়ে ১ হাজার থেকে ২ দু হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে যাবে। এটা দেশীয় সাইকেলের পাশাপাশি আমদানি করা সাইকেলের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়বে।’

২০২০-২১ অর্থ বছর কর বৃদ্ধি টপ নিউজ বাজেট

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর