ভারত-চীন: হিমালয়ে যুদ্ধে কার শক্তি বেশি?
১৮ জুন ২০২০ ১৮:৩১
সম্প্রতি হিমালয় পর্বতের অতি রুক্ষ অঞ্চলে চীন ও ভারতের সেনারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে ওই অঞ্চলে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। প্রায় ৪৫ বছর পর চীন-ভারত সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৫ জুন সোমবার রাতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে এক সংঘর্ষে ভারতের এক কর্নেলসহ ২০ জন নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় চীনের প্রায় ৪৩ সেনা নিহত বা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত। তবে চীনের পক্ষ থেকে এখনও কোন প্রাণহানির খবর স্বীকার করা হয়নি।
দুই প্রতিবেশী প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ে প্রায়ই দ্বন্দ্বে জড়ায়। সীমান্ত বিরোধের জেরেই ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে সরকারি দাবি অনুযায়ী ভারতের প্রায় দেড় হাজার ও চীনের প্রায় ৭০০ সেনা নিহত হন। এর পর ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশে এক সংঘর্ষে ৪ ভারতীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন। এর প্রায় ৪৫ বছর পর এবার সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। তবে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, সংঘর্ষের পর দিন মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি শান্ত করতে দুই দেশ বৈঠকে বসেছে।
তবে বৈঠক এর আগেও হয়েছিলো। সোমবার দিনভর বৈঠকের মধ্যেই রাতে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। দুই রাষ্ট্র যেভাবে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে তাতে ওই অঞ্চলে যদি ফের একবার যুদ্ধের দামামা বাজে তবে কী পরিণতি হতে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা নানা মত ব্যক্ত করছেন। দুই দেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ওই অঞ্চলে যুদ্ধ করতে কতটুকু সক্ষম তা নিয়েও চলছে বিস্তার আলোচনা।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সামরিক শক্তিতে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় হিমালয়ের রুক্ষ অঞ্চলে চীন ঠিক কতটুকু সক্ষম তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের আক্রমণে সূচনীয় পরাজয় হয়েছিলো ভারতের। তবে সামরিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সেই ভারত এখন অনেকটা বদলে গেছে। উচ্চতায় যুদ্ধ করতে ভারত এখন দারুণ সক্ষমতা অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন- লাদাখে সংঘর্ষ, যা জানা প্রয়োজন
বিভিন্ন সমর গবেষণার দাবি, ৬ দশক আগে যে অঞ্চলে যুদ্ধ হয়েছিলো ঠিক একই অঞ্চলে এবার উত্তেজনা বেড়েছে। সেসময় চীন যে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলো- এবার সেই ভারত এক নয়। এবার বড় পরিসরে সংঘর্ষ বাধলে ভিন্ন এক ভারতীয় সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হবে চীনকে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেলফের সেন্টার অ্যাট দ্য হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্ট ইন বোস্টন এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি’র পৃথক পৃথক সমীক্ষায় উঠে এসেছে হিমালয়ের রুক্ষ অঞ্চলে দুই দেশের সক্ষমতার চিত্র।
পারমাণবিক অস্ত্র
১৯৬২ সালে যখন একমাত্র যুদ্ধটি হয় তখন দুই দেশের কারো অস্ত্রাগারেই পারমাণবিক অস্ত্র ছিলো না। তবে বর্তমানে চীন ও ভারত অন্যতম পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশ। চীন ১৯৬৪ সালে পারমানবিক অস্ত্র তৈরি করে, পক্ষান্তরে ভারত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ১৯৭৪ সালে। দু’টি দেশই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি অবলম্বন করেছে।
এ সপ্তাহে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইআরপিআই) এর তথ্যমতে দেখা গেছে, চীনের সংগ্রহে প্রায় ৩২০ টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা ভারতের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ভারতের হাতে রয়েছে ১২০টি পারমানবিক অস্ত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্র সংখ্যা বাড়িয়েছে। বেইজিং ৪০টি পারমাণবিক অস্ত্র যোগ করেছে তার অস্ত্রাগারে যেখানে ভারত করেছে ১০টি।
দু’টি দেশেরই সংগ্রহেই রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র ছুড়তে সক্ষম অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, বোম্বার্স ও সাবমেরিন।
বিমান বাহিনী
গত মার্চে প্রকাশিত বেলফের সেন্টারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতের সংগ্রহে প্রায় ২৭০টি যুদ্ধবিমান রয়েছে যার মধ্যে ৬৮টি ভূমিতে শক্র লক্ষ্য করে আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়া চীনের সীমান্তের কাছেই ভারতের কয়েকটি ছোট এয়ারবেজ রয়েছে যেখান থেকে এসব এয়ারক্রাফট পরিচালনা করা সম্ভব। বেলফের এর গবেষণাপত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে।
পক্ষান্তরে বেলফের সেন্টারের গবেষণা মতে, চীনের সংগ্রহে রয়েছে ১৫৭টি যুদ্ধবিমান। এছাড়া ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ড্রোনের একটি ছোটখাটো বহর রয়েছে চীনের। দেশটির সেনারা ওই অঞ্চলে আটটি এয়ারবেজ ব্যবহার করে থাকে। তবে এত উচ্চতায় এসব এয়ারবেজের বেশিরভাগই শুধুমাত্র বেসামরিক কাজে ব্যবহারযোগ্য।
বেলফের সেন্টারের ওই সমীক্ষায় বলা হয়, ‘তিব্বত ও জিনজিয়াং অঞ্চলে চীনের যে এয়ারবেজগুলো রয়েছে তা অতি উচ্চতা- ভৌগলিক ও আবহাওয়াগত দিক থেকে জটিল এক অঞ্চলে অবস্থিত। এর অর্থ হলো চীনের যুদ্ধবিমানগুলো তাদের সক্ষমতার অর্ধেক ওজনের জ্বালানি ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উড়তে পারবে’।
ওই গবেষণায় বলা হয়, উড়ন্ত অবস্থায় জ্বালানি ভরার পদ্ধতিতে এসব যুদ্ধবিমানগুলো যুদ্ধের সময় বেশি অস্ত্রশস্ত্র ও জ্বালানি বহন করতে পারে তবে চীনের হাতে খুব বেশি এয়ারিয়েল ট্যাঙ্কার (উড়ন্ত অবস্থায় জ্বালানি ভরতে সক্ষম ট্যাঙ্কার) নেই- যা দ্বারা এ কাজ করা সম্ভব।
বেলফের সমীক্ষা এক্ষেত্রে ভারতীয় বিমানবাহিনীকেই এগিয়ে রেখেছে। ভারতের বিমানবাহিনীর সংগ্রহে থাকা মিরাজ-২০০০ এবং সুখই সু-৩০ জেটগুলো চীনের জে-১০, জে-১১ এবং সু-২৭ এর চেয়ে বেশি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতের মিরাজ ২০০০ এবং সু-৩০ যেকোনো আবহাওয়ায় মাল্টি রুল এয়ারক্রাফট হিসেবে কার্যকর। বিপরীতে চীনের সংগ্রহে থাকা জে-১০ শুধুমাত্র এমন সক্ষমতাসম্পন্ন।
সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারত ওই অঞ্চলে যেসব এয়ারবেজ নির্মাণ করেছে এর সবগুলো চীনের সক্ষমতা মাথায় রেখেই করা হয়েছে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সম্ভাব্য আক্রমণের কথা মাথায় রেখে ভারত ওই অঞ্চলে আবহাওয়া সহিষ্ণু অবকাঠামো, এয়ারবেজের উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা ও কন্ট্রোল, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করেছে।
এদিকে বেলফের সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, চীন তার দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে নিয়মিত হুমকির মুখে রয়েছে। চীন ওই অঞ্চলে এয়ারবেজ শক্তিশালীকরণে অধিক মনোযোগ দিয়েছে। যার ফলে হিমালয়ে কমপক্ষে চারটি এয়ারবেজ অত্যন্ত দুর্বল রয়ে গেছে।
এছাড়া বেলফেরের সমীক্ষায় অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে ভারতকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিমানবাহিনীর কিছু লড়াই ভারতকে মূল যুদ্ধে লড়ার প্রকৃত অভিজ্ঞতা দিয়েছে। বিপরীতে চীনের বায়ু-যোদ্ধাদের এমন অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। যুদ্ধের সময় চীনের পাইলটরা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বেশিরভাগ সময় স্থল কমান্ডের উপর নির্ভরশীল। অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে প্রকৃত এয়ার কমবেটে সংকটে পড়তে পারেন এসব পাইলট।
এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বে নির্ধারণ নয় এমন মহড়ায় দেখা গেছে চীনের পাইলটরা কৌশলগত সিদ্ধান্তের জন্য স্থলে নিয়ন্ত্রকদের উপর অত্যধিক নির্ভরশীল। এর অর্থ হলো, চীনের পাইলটদের লড়াইয়ের সক্ষমতা যতটুকু ধারণা করা হয় প্রকৃত যুদ্ধে তার চেয়ে অনেক কমে যাবে।
স্থলসেনা
আকাশে যেমন ভারতকে এগিয়ে রেখেছে সিএনএএস তেমনই স্থলে সক্ষমতায়ও ভারতই এগিয়ে বলে দাবি করা হয়েছে। সিএনএএস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সেনাবাহিনীতে অতীতে স্থলে যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রচুর যোদ্ধা রয়েছেন যারা সাম্প্রতিক বছরে একাধিকবার সীমিত ও নিম্ন তীব্রতার লড়াই লড়েছেন। পক্ষান্তরে, চীনের সেনাদের ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধের পর আর কোন প্রকৃত যুদ্ধে লড়ার অভিজ্ঞতা ।
১৯৭৯ সালে মাসব্যাপী ওই যুদ্ধে ভিয়েতনামের কাছে পরাজয় হয়েছিলো চীনের। ওই যুদ্ধে ভিয়েতনামের সেনাবাহিনীরা এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রকৃত যুদ্ধে লড়ার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিলো। ফলে ছোট সেনাবাহিনী নিয়েও চীনকে হারিয়েছিলো তারা।
বেলফেরের হিসাব মতে, হিমালয় অঞ্চলে ভারতের ২ লাখ ২৫ হাজার স্থল মোতায়েন করা যাবে। পক্ষান্তরে চীন দুই থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার সেনা ওই অঞ্চলে মোতায়েন করতে পারবে।
তবে ভৈগলিক কৌশলগত বিবেচনায় ওই অঞ্চলে চীনের বেশিরভাগ স্থলসেনা ইতিমধ্যেই তিব্বত ও জিনজিয়াং অঞ্চলে যেকোনো অস্থিরতা দমনে বা রাশিয়ার সীমান্তে যেকোনো আক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে। ওই স্থল সেনাদের যুদ্ধের সময় ওইসব অঞ্চল অরক্ষিত রেখে ভারত ফ্রন্টে পাঠানো বড় ধরনের সমস্যা বলে দাবি করা হয়েছে বেলফেরের সমীক্ষায়।
তবে সিএনএএস এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের স্থলসেনাদের খাড়া উপত্যকার রুক্ষ অঞ্চলে মোতায়েন করা হলে সেখান থেকে দ্রুত অন্য ফ্রন্টে পাঠানো প্রায় অসম্ভব কাজ। ফলে অন্য পয়েন্টে আক্রমণ আসলে ভারত বিপদে পড়বে। সংক্ষেপে এর অর্থ হলো- ভারতীয় সেনারাও পাহাড়ের দমবন্ধ পয়েন্টগুলিতে চীনা আর্টিলারি এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হতে পারে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে- যদি বড় আকারে যুদ্ধ হয় তবে কি ভারতের প্রত্যেকটি পয়েন্টে আঘাত হানার মত পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র চীনের হাতে আছে? বেলফের সমীক্ষায় ভারতের সাবেক এক বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, তার মতে, ভারতের একটি এয়ারফিল্ড একদিনে ধ্বংস করতে হলে চীনের ২২০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োজন। চীনের হাতে এ কাজে সক্ষম এমন ১ হাজার থেকে ১২শটি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এই সংখ্যা ভারতের কোনো এয়ারফিল্ড ধ্বংস করার পরিকল্পনা নিতে চীনকে উৎসাহিত করবে না।
তবে একটি ক্ষেত্রে চীনকে সবসময়ই এগিয়ে রাখতে হবে- আর তা হলো প্রযুক্তি এবং নতুন অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা। দেশটির বিশাল আকারের প্রতিরক্ষা বাজেট এবং দ্রুত সামরিক আধুনিকায়নের ফলে বেইজিং তার বাহিনীর যেকোনো দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজর অ্যাট দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়ালগ অ্যান্ড প্রগ্রেস ইন আফগানিস্তান এর নিশাঙ্ক মতওয়ানি বলেন, চীনের অর্থনীতি ভারতের চেয়ে পাঁচগুণ বড়। বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা বাজেট নয়াদিল্লীর চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি। চীন ও ভারতের মধ্যে সামরিক ক্ষমতার পার্থক্য বেইজিংয়ের পক্ষে রয়েছে এবং এই পার্থক্যটি দিন দিন কেবল প্রসারিত হচ্ছে।
সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচুর প্রবন্ধ ও ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে যেখানে দেখানো হচ্ছে তিব্বত অঞ্চলে মহড়ার জন্য নতুন অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে টাইপ ১৫ লাইট ট্যাঙ্ক এবং নতুন ৫৫ মিলিমিটার ভেহিকল-মাউন্টেড হোওটজের। এই দুই অস্ত্রই গত বছর চীনের জাতীয় দিবসের মিলিটারি প্যারেডে প্রথম প্রদর্শন করা হয়। চীনের গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে এক বিশেষজ্ঞ অস্ত্র দুটি সম্পর্কে বলেন, এগুলো পার্বত্য অঞ্চলে সীমান্ত রক্ষার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।
সামরিক মহড়া
চীন যখন সীমান্তে শক্তি বাড়ায় তখন বৃহৎ শক্তির সঙ্গে মিত্র বাড়াতে ব্যস্ত হয় নয়াদিল্লী। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন ভারতকে একটি ‘বৃহৎ প্রতিরক্ষা অংশীদার” বলে আখ্যায়িত করেছে। দুই দেশ অনেকগুলো দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সামরিক মহড়ায়ও অংশ নিয়েছে।
হিমালয়ে বড় পরিসরে যুদ্ধ লাগলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্যাটেলাইট দিয়ে তার নজরদারি সক্ষমতা ভারতকে যুদ্ধক্ষেত্রে আরও পরিষ্কার চিত্র পেতে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া জাপান, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মত সামরিক শক্তির সঙ্গে ভারত প্রায়ই যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়ে থাকে।
পক্ষান্তরে, চীনের যৌথ সামরিক মহড়াগুলো রাশিয়া ও পাকিস্তান ছাড়া এখনও স্বল্প পরিসরেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
-সিএনএন অবলম্বনে