চট্টগ্রামে ‘খোঁজ মিলছে না’ ২৯৫ জন করোনা রোগীর
১৮ জুন ২০২০ ২২:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) পজিটিভ হয়েছেন এমন ২৯৫ জন রোগীর খোঁজ মিলছে না। নমুনা পরীক্ষার সময় এ সব রোগীর কেউ কেউ সঠিক নাম-ঠিকানা দেননি। আবার কেউবা দেননি সঠিক মোবাইল নম্বরও কিংবা মোবাইল নম্বর দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
রোগীর অবস্থান শনাক্ত করতে না পারায় তাদের বাসস্থান লকডাউন করা যাচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। এ সব রোগীর সঙ্গেও যোগাযোগও করতে পারছে না স্বাস্থ্য প্রশাসন। প্রশাসনের নজরদারির বাইরে থাকায় এরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে বলেও আশঙ্কা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
ভবিষ্যতে বিড়ম্বনা এড়ানোর জন্য নমুনা নেওয়ার সময় রোগীর সঠিক নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিপিবদ্ধ করা এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি সংগ্রহের তাগিদ দিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন সিএমপির বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মো. আবদুল ওয়ারিশ খান।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোস্তফা খালেদ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নমুনা নেওয়ার সময় রোগীর নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরের সঙ্গে যেন এনআইডি কার্ডের ফটোকপি রাখা হয়। আমরা বিষয়টা বিবেচনায় নিয়েছি। আমরা অবশ্যই রোগীদের অনুরোধ করব সঠিক নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেওয়ার জন্য। তবে এনআইডি কার্ড নিয়ে একটু সমস্যা আছে। কেউ যদি এনআইডি কার্ড সঙ্গে না আনেন, সেই রোগীকে তো আমরা ফেরত দিতে পারব না।’
বুধবার (১৭ জুন) পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন মোট পাঁচ হাজার ৭৬৩ জন। মারা গেছেন ১২৮ জন।
গত মঙ্গলবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত রোগীর কোনো হদিস পায়নি সিএমপি। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে একাধিক মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সিএমপির উপ-কমিশনার (বিশেষ শাখা) মো. আবদুল ওয়ারিশ খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘নগরীতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ২৯৫ জন করোনা পজিটিভ রোগীর কোনো ঠিকানা কিংবা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো নম্বার পাইনি। অনেক রোগীই তাদের ঠিকানা ভুল দিচ্ছেন। অনেকে অসম্পূর্ণ দিচ্ছেন। মোবাইল নম্বর হয়ত ভুল অথবা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ শুধু ঠিকানা অথবা মোবাইল নম্বর দিচ্ছেন। ঠিকানা ধরে তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এ জন্য তাদের বাসস্থান আমরা লকডাউন করতে পারছি না। তাদের আইসোলেশন নিশ্চিত করাও যাচ্ছে না। এ জন্য আমরা নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরের সঙ্গে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি নেওয়ার অনুরোধ করেছি।’
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘লাপাত্তা রোগীরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখছে বলে আমাদের ধারণা। অনেককে খুঁজতে খুঁজতেই ১৪দিন পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে তারা যে সুস্থদের সংস্পর্শে যায়নি, সেটা তো আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এ জন্য নমুনা সংগ্রহের বুথগুলোতে পরীক্ষা করতে যারা আসছেন, তাদের রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এখন জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদ অনুলিপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস লাপাত্তা