মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধে মানবাধিকার কমিশনের ৮ সুপারিশ
১৮ জুন ২০২০ ২২:৫৬
ঢাকা: মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নারী পাচার এবং অবস্থানরত শ্রমিকদের নির্যাতন বন্ধে ৮ দফা সুপারিশ তৈরি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত গৃহকর্মী আবিরনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি এ সুপারিশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সুপারিশগুলো কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন এরইমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ। সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত গৃহকর্মী আবিরনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি এসব সুপারিশ করেছে।
৮ দফা সুপারিশগুলো হচ্ছে—
এক| মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিশেষভাবে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী নিগ্রহ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাষা দুর্বলতাকে এর একটি অন্যতম কারণ বলা হয়ে থাকে। তাই গৃহকর্মী হিসাবে বিদেশ গমনেচ্ছু নারী কর্মীকে সংশ্লিষ্ট ভাষা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ভবনে কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
দুই| রিক্রুটিং লাইসেন্স ভাড়া দেওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিন| প্রত্যেক গৃহকর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা যথাযথভাবে সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
চার| রিক্রুটিং এজেন্সি নয় বরং সীমিত আকারে দক্ষ নারী শ্রমিক সরাসরি সরকারি ভাবে (জি টু জি পদ্ধতিতে) প্রেরণ করা যায়।
পাঁচ| বিদেশে স্পন্সর এর অধীনে থাকাকালীন যেকোন দুর্ঘটনা, মারধর, ধর্ষণ, হয়রানির যথাযথ বিচার চাওয়া এবং পাওয়ার অধিকার আদায়ে মামলা পরিচালনায় দূতাবাসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রয়োজন।
ছয়| স্থানীয়ভাবে আইন সহকারী নিয়োগের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন।
সাত| বিএমইটির ডাটাবেজে বিদেশগামী সকল কর্মীর তথ্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। যিনি ডাটা এন্ট্রি করবেন তাকে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন এবং লগআউটের বিধান থাকতে হবে।
আট| অভিবাসী কর্মী গ্রহণকারী দেশসমূহের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পর্যায়ক্রমে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করতে পারে।
এছাড়া নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আবিরনকে প্রতারণার মাধ্যমে সৌদিতে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ, আবিরনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কফিনে ফিরলো আবিরনেরও স্বপ্ন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মানবাধিকার কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে সংস্থাটির সদস্য ড. নমিতা হালদাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি তদন্ত শেষে এসব সুপারিশ করে।