করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন: ইমামের চাকরিচ্যুতির ঘটনায় আইনি নোটিশ
২২ জুন ২০২০ ১৬:১১
ঢাকা: করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির দাফনে অংশ নেওয়ায় ফেনীর সোনাগাজী পৌরসভার ‘বক্স আলী ভূঁইয়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. নূর উল্লাহকে চাকুরিচ্যুত করার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২২ জুন) সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ই-মেইলে এবং এসএমএস করে এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশটি সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভার মেয়র, মতিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান, মসজিদ কমিটি সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনা বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, একটি জাতীয় দৈনিকে ‘করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন করায় ইমাম চাকুরিচ্যুত’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফেনী জেলার সোনাগাজী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বক্স আলী ভূঁইয়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. নূর উল্যাহকে করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন কাজে সহায়তা করায় চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার সাতারবাড়িয়া গ্রামে আত্মগোপনে আছেন।
নোটিশে আইনজীবী বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সোনাগাজীর ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী মাওলানা নূর উল্যাহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন সোনাগাজী উপজেলার করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণকারীদের দাফন কমিটির একজন সদস্য। গত ১৭ জুন মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুলাখালী গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা জিয়াউল হক করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে তিনি উক্ত দাফন কাফনে অংশগ্রহণ করেন। এরফলে কমিটির অনুমতি না নিয়ে দাফনে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে তাকে ইমামের দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উপরোক্ত ঘটনা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব ও সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ অবগত আছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে নিজের আত্মীয় স্বজনও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে অপারগতা প্রকাশ করে। এমনকি সন্তান তার মাতা পিতাকে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার নজিরও দেখা যায়। অথচ মাওলানা নূর উল্যাহ ইসলামের বিধান অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। উপরন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক গঠনকৃত দাফন কমিটির একজন সদস্য হিসাবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এটি অত্যন্ত মহৎ ও প্রসংশনীয় কাজ।
এ কাজে অংশ নিয়ে তিনি দেশের কোনো আইন ভঙ্গ করেননি। তিনি অশালীন ও অমানবিক কোনো কাজও করেননি। বরং তিনি ইসলামের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করেছেন।
এমতাবস্থায় তাকে সাময়িকভাবে ইমামের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো আইনগত-নৈতিক কারণ থাকতে পারে না। তাকে অনতিবিলম্বে স্বপদে বহাল করে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় তার ওপর এই বেআইনি ও অমানবিক শাস্তি আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।