Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমেরিকায় কনস্যুলেট ভবন ক্রয়ে দুর্নীতি: আইনি নোটিশ পায়নি দুদক


২২ জুন ২০২০ ১৬:৪৩

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে কনস্যুলেট ভবন ও কনসাল জেনারেলের বাসভবন ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। তবে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছারের পাঠানো আইনি নোটিশ এখনও পায়নি দুদক।

নোটিশটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লস অ্যাঞ্জেলসের সাবেক কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকেও ই-মেইল যোগে পাঠানো হয়।

আইনি নোটিশ পাওয়ার বিষয়ে সারাবাংলার পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, কমিশনে এই ধরনের কোনো চিঠি সোমবার দুপুর পর্যন্ত আসেনি। যেহেতু কমিশন কোন চিঠি পায়নি তাই এই বিষয়ে কমিশনের কিছু করার নেই। তবে অভিযোগ পেলে কমিশন অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো অভিযোগ পেলে সেটা আমাদের একটি কমিটি যাচাই-বাছাই করেন। এরপর অন্যান্য প্রক্রিয়া মেনে সেটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে লস অ্যাঞ্জেলেসে কনস্যুলেট ভবন ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়ে এখনও আমরা কোনো চিঠি পাইনি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

অপরদিকে ১৮ জুন পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, যেহেতু লস অ্যাঞ্জেলেসে কনস্যুলেট ভবন ও কনসাল জেনারেলের বাসভবন ভবন ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, সেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন অনুযায়ী উক্ত অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান, তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেননা বিষয়টির সাথে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি জড়িত। তাছাড়া এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি-না সেটা জানার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। এরকম বড় ধরনের একটি দুর্নীতির অভিযোগে কোনো দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দুর্নীতিবাজরা অনুপ্রাণিত হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী স্লোগান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

নোটিশে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ওই সময়ের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের যুক্ত করে নোটিশে বলা হয়, লস এঞ্জেলসে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের জন্য গত বছর জুন মাসে একটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটির ক্রয় মূল্য দেখানো হয়েছে ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার, যাহা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ২৩ গুণ বেশি। অন্যদিকে কনস্যুলেট অফিসের কনসাল’র বাসভবনের জন্য আরেকটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটি কেনা হয়েছে ৩২ লাখ মার্কিন ডলারে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ২০ লাখ ডলারের চেয়ে বেশি হওয়ার কথা নয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, কনস্যুলেট অফিস এবং আবাসিক ভবন বাজারমূল্যের চেয়েও অনেক বেশি দামে কেনায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লস অ্যাঞ্জেলসের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ঢাকায় নিয়ে এসে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

কিন্তু পরবর্তী সময়ে এত বড় দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত অথবা যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জনস্বার্থের পরিপন্থী। এই সকল দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের চরম ক্ষতি বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনি নোটিশ কনস্যুলেট ভবন টপ নিউজ দুদক দুর্নীতি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

সম্পর্কিত খবর