Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘তামাক পণ্যে কর বাড়িয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় সম্ভব’


২২ জুন ২০২০ ২২:৫৫

ঢাকা: ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রস্তাব উপেক্ষিত হওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছে। সংগঠনগুলো বলছে, বাজেটে তামাক কর ও মূল্য বাড়াতে তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে তামাক পণ্যের ব্যবহার যেমন কমবে, তেমনি তামাক খাত থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন করা সম্ভব হবে। বাড়তি এই অর্থ দিয়েই করোনাভাইরাস মোকাবিলা সংক্রান্ত থোক বরাদ্দ মেটানো যাবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে ২০টি তামাকবিরোধী সংগঠন আয়োজিত অনলাইন বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।

তামাকবিরোধীরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের দাম নামমাত্র বাড়ছে বলে সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমবে এবং ব্যবহার বাড়বে। অন্যদিকে, চতুর্থ বছরের মতো সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক প্রায় অপরিবর্তিত রাখায় লাভবান হবে তামাক কোম্পানিগুলো। সিগারেটের মূল্যস্তর অপরিবর্তিত রাখায় ভোক্তার স্তর পরিবর্তনের সুযোগ অব্যাহত থাকবে এবং কোম্পানি কর ফাঁকির সুযোগ পাবে। বিড়ি ও গুলের দাম অতি সামান্য বাড়ায় দরিদ্র মানুষ এসব পণ্যের ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবে না। বিড়ির সম্পূরক শুল্কও টানা চার বছর অপরিবর্তিত রাখায় বিড়ি ব্যবসা লাভজনক হবে।

তারা আরও বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ এবং সব তামাকপণ্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপের দাবি আমলে না নেওয়ায় সরকার ব্যাপক পরিমাণে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। সর্বোপরি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তামাককে করোনা সংক্রমণে সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে জোর তাগিদ দিচ্ছেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই। ফলে দেশের প্রায় চার কোটি তামাক ব্যবহারকারীর মধ্যে মারাত্মক করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সাংবাদিক ও টিভি টুডে’র এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীরসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এটিএন বাংলার নিউজ এডিটর নাদিরা কিরণ।

বিজ্ঞাপন

বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে ২০২০-২১ সালের চূড়ান্ত বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা চারটি থেকে দুইটিতে (নিম্ন ও প্রিমিয়াম) নামিয়ে আনা; বিড়ির ফিল্টার ও নন-ফিল্টার মূল্য বিভাজন তুলে দেওয়া; ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের (জর্দা ও গুল) সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো এবং সব তামাক পণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করার প্রস্তাব তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে পারবে। এছাড়া ৩ শতাংশ সারচার্জ থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় অর্জন করা সম্ভব হবে।

তামাকবিরোধী সংগঠন বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বিসিসিপি, এসিডি, ইপসা, এইড ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বিএনটিটিপি, বিটা, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব, প্রত্যাশা, টিসিআরসি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, উফাত, তাবিনাজ, ভয়েস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) ও প্রজ্ঞা এই বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

১১ হাজার কোটি টাকা তামাক পণ্য তামাক পণ্যে কর রাজস্ব আয় সিগারেট সিগারেটে কর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর