Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে— রিজভী


২৩ জুন ২০২০ ১৫:২৪

ফাইল ফটো: রুহুল কবীর রিজভী

ঢাকা: করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (২৩ জুন) নয়াপল্টনে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘দেশে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাড়ে তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতায় এখন সর্বত্রই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত ল্যাব ও দক্ষ জনবল না থাকায় লক্ষ্য নির্ধারণ করে নমুনা পরীক্ষায় নামতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রকট হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতার অভাব। নমুনা সংগ্রহের সরঞ্জাম এবং পরীক্ষার কিটের স্বল্পতা জটিল আকার ধারণ করেছে। পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে ঢের বিলম্ব হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

মফস্বল থেকে জেলা সদরের ল্যাবে নমুনা পৌঁছে স্তূপ হয়ে পড়ে থাকছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এতে দেশে আক্রান্তের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। প্রয়োজনীয় মাত্রায় পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় সংক্রমণের নানা উপসর্গ নিয়েই হাজার হাজার মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সামাজিক সংক্রমণ জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে।’

মহামারি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয়ভাবে কাজের সমন্বয় নেই অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘নেই সুনির্দিষ্ট কোনো পলিসিও। বড় সমস্যা হচ্ছে কোভিড-১৯-এর মতো মহাদুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের একের পর এক ভুল, আত্মঘাতী ও সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপে আজ দেশের হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছে। ক্ষমতাসীনদের মনোযোগ দুর্নীতি-লুটপাটে। ভাইরাসের রাজনীতিকরণেই তারা ব্যস্ত আছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘দেশে যখন দুর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে তখন ক্ষুধার্ত ও নিরন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। কিন্তু আমাদের ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। হামলা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। মামলা- গ্রেফতারও করা হচ্ছে। এই বর্বরোচিত হামলা করোনাক্রান্ত দেশকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনা ভাইরাসের মরণছোবল থেকে মানুষকে উদ্ধার নয়, বরং সারাদেশে সন্ত্রাস চালিয়ে সরকার নিজেদের লুটপাট ও গদি সামলাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অসহায় মানুষের চিৎকার ও ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার তাদের হৃদয়কে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না।’

রিজভী বলেন, ‘গত ২১ মে সাতক্ষীরা জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্যামনগর উপজেলার অসহায়, গরীব ও ছিন্নমুল মানুষদের মাঝে ২১ জুন বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য জগলুল হায়দারের নির্দেশে তার পুত্র উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক রাজিব হায়দারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা দফায় দফায় বর্বরোচিত হামলা চালায়।’

রিজভীর অভিযোগ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন একটি মাইক্রোবাসসহ কমপক্ষে ১৫-২০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর এবং বেদম পিটিয়ে বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে আহত করে।

‘কোথায় কে বাধা দিয়েছে আপনারা স্পষ্ট করুন, তথ্য-প্রমাণ দিন। অভিযোগ সত্য হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। মানবিক কাজে বাধা প্রদান আওয়ামী লীগের নীতি নয়’— ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ গণমাধ্যমে ও টেলিভিশনের ফুটেজে দেখেছেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ’ কীভাবে ত্রাণ বিতরণের বহরে তাণ্ডব চালিয়েছে। তথ্য প্রমাণ প্রতিটি মিডিয়ায় আছে।’

‘কিন্তু কে বাধা দিয়েছে তা কাদের সাহেবরা জানেন না। সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে দিবানিদ্রা গেলে জানবেন কীভাবে? দেখবেন কীভাবে? দেশের মানুষের ঘোরতর সন্দেহ, এই হামলা সরকারের উপর মহলের ইঙ্গিতে ও জ্ঞাতসারেই হয়েছে। একারণে তাদের দলের পোষ্য সন্ত্রাসীদের এতো বড় অপকর্মকে আড়াল করতে চাচ্ছেন তারা’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘তথ্য-প্রমাণ জানার জন্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা আছে। বিভিন্ন এজেন্সি আছে। স্থানীয় প্রশাসন আছে। জনগণের টাকায় তারা বেতন পাচ্ছেন। কাজেই ওই অপকর্মগুলোর তথ্য তো কাদের সাহেবদেরই সর্বপ্রথম জানার কথা। কিন্তু সরকারি বাসভবনে বসে ভিডিও বার্তায় তথ্য-প্রমাণ চাওয়াটা হাস্যকর।’

করোনা বিএনপি মৃত্যুঝুঁকি রুহুল কবির রিজভী সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর