হাসপাতালের বেডের তথ্য নিয়ে অ্যাপ বানাতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন
২৩ জুন ২০২০ ১৬:৪৬
ঢাকা: একটি অ্যাপ মূর্হতের মধ্যেই জানিয়ে দেবে কোন হাসপাতালে কয়টি বেড আছে। আইসিইউ বেড কয়টি। তার মধ্যে খালি কয়টি। এমন সব তথ্য নিয়ে একটি অ্যাপ তৈরির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে একে ক্রিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (২৩) স্বাস্থ্য সচিব বরাবর ই-মেইল এবং ডাকযোগে এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপস বিভাগের প্রধান আইটি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মাদ রিয়াজ উদ্দিন।
সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অ্যাপটিতে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সাধারণ বেড, আইসিইউ বেড, হাই-ফ্লো অক্সিজেন বেড, ভেন্টিলেটর ম্যানেজমেন্টসহ যাবতীয় তথ্য থাকবে।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে অ্যাপসটি তৈরি করে ১০ দিনের মধ্যে মানুষের সেবায় তা উন্মুক্ত করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
এই আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত দেখছি বেড খালির তথ্য না জানায় হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। করোনার এই পেনডামিক শুধু আমাদের জন্যই নয়, সারাবিশ্বের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। সারা পৃথিবী অন্যান্য কম্পোনেন্টের সঙ্গে এই পেনডামিক মোকাবিলা করার জন্য টেকনোলজির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করছে। বিষয়টি দেখে আমরাও দেশের সব সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের সাধারণ বেড, আইসিইউ বেড, হাই-ফ্লো অক্সিজেন বেড, ভেন্টিলেটর ম্যানেজমেন্টের জন্য একটি অ্যাপ নিজস্ব খরচে করতে ইচ্ছুক।’
তিনি জানান, এই অ্যাপে কোন হাসপাতালে কত বেড আছে তা দেখা যাবে। সেই সঙ্গে হাসপাতালের বেডসমূহের রিয়েল-টাইম স্ট্যাটাস দিবে, অর্থাৎ এই মুহূর্তে কোন হাসপাতালে কতটি বেড খালি আছে তার অনলাইন ডাটা প্রদর্শন করবে। এতে একজন রোগী অযথা ছোটাছুটি না করে তার গন্তব্য ঘরে বসেই নির্ধারণ করতে পারবে।
তিনি আরও জানান, প্রস্তাবিত ডাটাবেজ দিনে দুবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই হালনাগাদ করবে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সরকারের নজরদারি কঠোর হবে, যা দিল্লিতে করা হচ্ছে। এই করোনাকালীন হাসপাতালের বেড ম্যানেজমেন্ট করা হলে জনসাধারণের ভোগান্তি অনেকটাই লাঘব হবে বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই অ্যাপের জন্য সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সাধারণ বেড, আইসিইউ বেডসহ সবধরনের বেডের ডাটা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত অ্যাপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- রোগীকে তথ্যের জোগান দিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা। পাশাপাশি চিকিৎসা-পরিক্রমায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে জরুরি সেবা পেতে সহযোগিতা করা। এছাড়া অ্যাপটিতে যোগ হতে পারে এমন ব্যবস্থা যাতে কোনো হাসপাতাল রোগী ভর্তি নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে স্পটে বসেই রোগী সরকার নির্ধারিত কন্ট্রোলরুমে কল দিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।’
মোহাম্মাদ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘এই অ্যাপটির সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরই ন্যস্ত থাকবে। এতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকারের কাঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে। আমরা জনগণ ও রাষ্ট্রকে সাহায্য করার জন্য এই অ্যাপটি তৈরির সবধরনের টেকনিক্যাল সাপোর্ট এবং আর্থিক ব্যয় বহন করতে ইচ্ছুক।’
ভারতের দিল্লিতে এই ধরনের একটি অ্যাপ প্রচলন করেছে, যা দিল্লির হাসপাতালগুলোর বেড ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, করোনার মোকাবেলায় অনলাইনে সেন্ট্রাল বেড ব্যুরো সিস্টেম চালুর নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। পরবর্তীতে হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিলেও চেম্বার আদালতে তা স্থগিত হয়ে যায়।
অ্যাপ আবেদন একে ক্রিয়েশন তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালের বেড