গাড়ির সকল স্পেয়ার পার্টস আমদানি শুল্কমুক্তের দাবি
২৩ জুন ২০২০ ২০:০০
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে বিদেশ থেকে নতুন গাড়ি আনতে গেলে যে ডলার লাগবে সে ডলারও ব্যবসায়ীদের কাছে আগামীতে কমে যাবে। ডলার বাজারে না পাওয়া গেলে আমাদের নতুন গাড়ি আনতে অসুবিধা হবে। তখন আমাদেরকে এই বিদ্যমান গাড়িগুলোকেই ব্যবহার করতে হবে আরও অন্তত দুবছর। সেজন্য এই অর্থবছরে যত ধরনের স্পেয়ার পার্টস আমদানি হবে তা সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলারস অ্যান্ড ম্যানুফেচারারস অ্যাসোসিয়েশন (বামা)।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) বিকেলে বামা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অটোমোবাইল সেক্টরের ভূমিকা’ শীর্ষক অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, আগামীতে আমাদের ট্যাক্স-ভ্যাট দিতে অসুবিধা হবে না। আজকে যদি স্পেয়ার পার্টসের ওপর থেকে ট্যাক্স-ভ্যাট সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে যারা গাড়ি ব্যবহার করছে তারা অনেক ভালোভাবে আরও দুই বছর ব্যবহার করতে পারবে।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বামার প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ, রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বামার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান খান, ইফাদ অটোজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বামার ভাইস প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ, র্যাংস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বামার জয়েন্ট সেক্রেটারি মিসেস সোহানা রউফ চৌধুরী এবং বামার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দ্বীন।
আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে নতুন গাড়ি আনতে গেলে যে ডলার লাগবে সে ডলার ও আমাদের কাছে আগামীতে কমে যাবে। ডলার বাজারে না পাওয়া গেলে আমাদের নতুন গাড়ী আনতে আসুবিধা হবে। তখন আমাদেরকে এই বিদ্যমান গাড়িগুলোকেই ব্যবহার করতে হবে আরও অন্তত দুই বছর। সেজন্য আমরা চাইব এই অর্থবছরে যত ধরনের স্পেয়ার পার্টস আমদানি হবে তা সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত করতে হবে। অন্তত ১ বছর পর্যন্ত। ততদিনে আমাদেরও প্রোডাশন বেজ চালু হয়ে যাবে। আগামীতে আমাদের ট্যাক্স-ভ্যাট দিতে অসুবিধা হবে না। আজকে যদি স্পেয়ার পার্টসের ওপর থেকে ট্যাক্স-ভ্যাট সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে যারা গাড়ি ব্যবহার করছে তারা অনেক ভালোভাবে আরও দুই বছর ব্যবহার করতে পারবে। অরিজিনাল পার্টসগুলো পাবে, সাশ্রয়ী হবে এবং আমাদের দেশে যেহেতু অনেক ওয়ার্কশপ আছে তারা কাজ পাবে। এ দুটিই আমাদের সরকারের কাছ দাবি থাকবে।’
রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বামার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের শিল্পবান্ধব নীতিমালা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনার আলোকে প্রদত্ত বিভিন্ন সরকারি প্রণোদনা ও নীতি সহায়তার কারণে দেশের মোটরসাইকেল শিল্প বিগত ১০ বছরে আমদানি নির্ভর খাত থেকে দেশীয় উৎপাদন নির্ভর শিল্পখাতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোটরসাইকেল শিল্প ও থ্রি-হুইলার খাতের অবদান অনেক। দেশীয় মোটরসাইকেল ইতোমধ্যে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। মোটরসাইকেলের কম্পোনেন্ট (যন্ট্রাংশ ও আনুষঙ্গিক উপকরণ) তৈরি করার জন্য দেশে বেশ কিছু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপিত হয়েছে।’
ইফাদ অটোজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বামার ভাইস প্রেসিডেন্ট তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের প্রতিটি সমৃদ্ধ শিল্প-কারখানার কার্যক্রম বর্তমানে ৪ লাখ ট্রাক দ্বারা পরিবেশিত হয় যেখানে ৩০ লাখেরও অধিক মানুষ সরাসরি বাণিজ্যিক পরিবহণ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে আমাদের জাতির উন্নয়নে সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো আরএমজি খাত। এ খাতের আমদানি-রপ্তানি লজিস্টিকের ৯০ ভাগ বাণিজ্যিক ট্রাক এর মাধ্যেমে পরিচালিত হয়। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন এর খাদ্যশস্য, শাকসবজি, ঔষধ এবং অন্যান্য দৈনন্দিন চাহিদা সরবরাহ ও বাজারজাত করণের কাজে বাণিজ্যিক ট্রাক পরিবহন শিল্প অনিবার্যভাবে জাতির সেবায় অনবদ্য অবদান রাখছে। পরিশেষে আমি এটাও উল্লেখ করতে চাই যে, ট্রাক আমদানির মাধ্যেমে প্রতি বছর শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ বার্ষিক আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে।