আমেরিকায় কনস্যুলেট ভবন কেনায় দুর্নীতি: আদালতে যাচ্ছেন আইনজীবী
২৫ জুন ২০২০ ০১:০৯
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে কনস্যুলেট ভবন ও কনসাল জেনারেলের বাসভবন কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত এবং জড়িতেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার। সে নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। জানিয়েছেন, শিগগিরই বিবাদীদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।
বুধবার (২৪ জুন) আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লবের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। চার দিন পার হলে গেলেও নোটিশের কোনো জবাবও পাইনি। নোটিশ পাওয়ার পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানতে পারিনি। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছি। শিগগিরই এ বিষয়ে রিট মামলা দায়ের করব।
আরও পড়ুন- আমেরিকায় কনস্যুলেট ভবন ক্রয়ে দুর্নীতি: আইনি নোটিশ পায়নি দুদক
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে কনস্যুলেট ভবন ও কনসাল জেনারেলের বাসভবন কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতি অভিযোগ তদন্ত ও জড়িতেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১৮ জুন আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এই দুই আইনজীবী। নোটিশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এবং বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লস অ্যাঞ্জেলসের সাবেক কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে বিবাদী করা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, যেহেতু ভবন দু’টি কেনার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তাই দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান, তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও জড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সেটা জানার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। এত বড় ধরনের একটি দুর্নীতির অভিযোগে কোনো ধরনের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দুর্নীতিবাজরা অনুপ্রাণিত হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী স্লোগান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের যুক্ত করে নোটিশে বলা হয়, লস এঞ্জেলসে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের জন্য গত বছর জুন মাসে একটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটির ক্রয় মূল্য দেখানো হয়েছে ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার, যা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ২৩ গুণ বেশি। অন্যদিকে কনস্যুলেট অফিসের কনসালের বাসভবনের জন্য আরেকটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটি কেনা হয়েছে ৩২ লাখ মার্কিন ডলারে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ২০ লাখ ডলারের চেয়ে বেশি হওয়ার কথা নয়।
আরও পড়ুন- আমেরিকায় কনস্যুলেট ভবন কেনায় দুর্নীতি, তদন্ত চেয়ে আইনি নোটিশ
নোটিশে আরও বলা হয়, কনস্যুলেট অফিস ও আবাসিক ভবন বাজার মূল্যের চেয়েও অনেক বেশি দামে কেনায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লস অ্যাঞ্জেলসের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ঢাকায় নিয়ে এসে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে এত বড় দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত অথবা যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জনস্বার্থের পরিপন্থী। এসব দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের চরম ক্ষতি বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি নোটিশ কনসাল জেনারেলের বাসভবন কনস্যুলেট ভবন কনস্যুলেট ভবন কেনায় দুর্নীতি