কুয়াকাটায় ১ জুলাই থেকে খুলছে পর্যটন শিল্প
২৬ জুন ২০২০ ০৯:২৫
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): দীর্ঘ ৩ মাসেরও বেশি সময় পরে পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় ফিরতে যাচ্ছে প্রাণচাঞ্চল্য। হোটেল ও মোটেলসহ ট্যুরিজম খাতের বিভিন্ন বিষয় আনুষাঙ্গিক কর্মকাণ্ড চালুর অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। ১ জুলাই থেকে খুলতে যাচ্ছে পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট সব সেবা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন এ অনুমতি দিয়েছে। এর আগে, গত ৫ জুন পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় হোটেল গ্রেভার ইনে বর্তমান পরিস্থিতিতেও পর্যটন চালু রাখার বিষয়ে তিন দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুতেই গত ১৭ মার্চ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়, কুয়াকাটায় পর্যটন শিল্প বন্ধ রাখতে হবে। এরপরই সাগরকন্যা
কুয়াকাটায় বন্ধ রয়েছে পযর্টন শিল্প। পরে জুন থেকে সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও বন্ধ রয়েছে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, পার্ক, ওয়াটার বাস, ট্যুরিস্ট বোট, আচারের দোকান, ছাতা-বেঞ্চ, শুঁটকির দোকান, শপিং মল, রাখাইন মহিলা মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পর্যটন শিল্পে যুক্ত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর ফলে তাদের কয়েকশ টাকা ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্নভাবে এই খাতে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে দীর্ঘ আলোচনার পর জেলা প্রশাসক আগামী ১ জুলাই থেকে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হোটেলসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেন।
জেলা প্রশাসকের এ অনুমোদনের ঘোষণায় এরই মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কুয়াকাটা সি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস পরিচালক জনি আলমগীর বলেন, এই মহামারিতে আমাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমরা চূড়ান্ত ক্ষতির মধ্যে পড়েছিলাম। ১ জুলাই থেকে ব্যবসা শুরু করতে পারলে তবু হয়তো কিছুটা ব্যবস্থা হবে।
সৈকত হোটেলের শেখ জিয়াউর রহমান বলেন, মহামারির মধ্যেও কিভাবে সেবা দিতে হবে, সে বিষয়ে আমাদের হোটেল বয়দের ট্রেনিং হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব পর্যটকদের সুরক্ষা দিতে।
অভিজাত হোটেল গ্রেভারইনের ম্যানেজার সাজ্জাত মিতুল বলেন, এই মহামারির মধ্যেও দেশের সব অফিস-আদালতেই খুলে গেছে। তাহলে আমরাই বা কেন বন্ধ থাকব? আমরা আশা করছি, পর্যটকদের সুরক্ষিত রেখেই পর্যটন চালু রাখা যাবে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরিফ বলেন, আমরা জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি, ১ জুলাই থেকে সব নিয়ম মেনে আমরা কাজ শুরু করতে পারব।
পরে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকারের দেওয়া শেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শর্ত মেনে আবাসিক হোটেলগুলো খোলা রাখা যেত। তবে সতর্কতার কারণেই হোটেল-মোটেলগুলো এতদিন বন্ধ রেখেছিলেন মালিকরা। তাদের ধন্যবাদ জানাই। এখনকার পরিস্থিতিতে কিভাবে হোটেলসহ বাকি সব সেবা চালু রাখা যাবে, সে বিষয়ে সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশিক্ষণ অনুযায়ী ট্যুরিজম সেবা চালু রাখবেন।