Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম অধিবেশনে সোমবার অর্থ বিল, পরদিন বাজেট পাস


২৮ জুন ২০২০ ১৭:০২

ঢাকা: করোনা মহামারির কারণে দেশের ইতিহাসে সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন শেষ হতে যাচ্ছে। মাত্র ৮ কার্যদিবসে এবারের বাজেট অধিবেশনে সোমবার (২৯ জুন) পাস হবে অর্থ বিল। আর পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (৩০) বাজেট পাস হবে বলে জানা গেছে।

গত ১০ জুন শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন এ পর্যন্ত ৫ কার্যদিবস বসেছে। অতীতে বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এটি হচ্ছে সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন। যে অধিবেশনে মাত্র একদিন প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশনে অন্তত ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা আলোচনার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা কমিয়ে আনা হয়। অতীতে বাজেটের ওপর ৬০ থেকে ৬৫ ঘণ্টা আলোচনার রেকর্ড রয়েছে। সংসদ সচিবালয় থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে নানা সতর্কতার পরও একের পর এক সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে যাতে কেউ করোনা আক্রান্ত না হন, সেজন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অধিবেশনে যোগ দিবেন, এমন সংসদ সদস্যদের করোনা ভাইরাসের নমুনা টেস্ট করানো হয়েছে। বাজেট পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ দূরের কথা, অনেকে অধিবেশনে যোগ দিতে পারছেন না। আবার নমুনা টেস্টে উত্তীর্ণ (করোনা নেগেটিভ) এমপিদের গৃহবন্দী থাকতে হচ্ছে। এজন্য মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন বলে সরকারি দলের একাধিক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন। তারা জানান, করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। অধিবেশনে স্বল্প সংখ্যক এমপির উপস্থিতি ও আলোচনায় এবার বাজেট পাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বাজেট হবে বলে সাংবাদিকেদর জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি জানান, অধিবেশন কক্ষসহ সংসদ ভবনে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অধিবেশন আরও সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৯ ও ৩০ জুন দুই কার্যদিবস চলবে। এরপর অধিবেশন মুলতবি করে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কোনো একদিন সমাপনী করা হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করার পাশাপাশি উপস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত থাকছেন। বিদ্যমান আসন বিন্যাস পরিবর্তন করে তিন থেকে চার ফুট দূরত্ব বজায় রেখে আপৎকালীন নতুন আসন বিন্যাস করা হয়েছে। অধিবেশনে কারা যোগ দিবেন, তার তালিকা করে প্রধান হুইপের দফতর থেকে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রবীণ ও অসুস্থ সংসদ সদস্যদের সংসদ অধিবেশনে যোগ না দেওয়া জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সংসদ অধিবেশনকে ঘিরে বাড়তি সতর্কতা ছিল শুরু থেকেই। অধিবেশন শুরুর আগে সংসদে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা টেস্ট করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। টেস্টে করোনা নেগেটিভ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইসোলশনে রাখা হয়। কিন্তু তারপরও মন্ত্রী-এমপি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা আক্রান্তের খবর এবং সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লহ’র মৃত্যুর পর সংসদ সদস্যদের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। অধিবেশনে যোগ দিবেন এমন ১৭০ জন সংসদ সদস্যকে টেস্ট করাতে বলা হয়। তাদেরকে ভবনের মেডিকেল সেন্টারে নমুনা পরীক্ষার জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। তবে অনেকেই ঢাকার বাইরে থাকায় তারা নিজ নিজ এলাকায় নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংসদ ভবন মেডিকেল সেন্টারের নমুনা বুথ থেকে পাওয়া তথ্যে জানাগেছে, গত ২০ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত সেখানে ৯৮ জন সংসদ সদস্য নমুনা দিয়েছেন। সেখানে সর্বশেষ সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ফেরদৌসি ইসলাম জেসি’র করোনা পজিটিভ এসেছে। তিনি বর্তমানে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ন্যাম ভবনের বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন।এর আগে করোনা পজিটিভ ফলাফল পেয়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হক। তিনি বর্তমানে রাজধানীর আদাবরে নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এ পর্যন্ত ১৮জন মন্ত্রী-এমপি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া সংসদ মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষায় চলতি মাসে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা পজিটিভ এসেছে। আর সংসদ ভবনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রায় দুইশ’ সদস্য করোনা আক্রান্ত হন। যাদের বেশির ভাগই ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

এ পর্যন্ত যেসব সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা হলেন- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সাবেকমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক প্রধান হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ, সাবেক হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার, রেল মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়, মোসলেম উদ্দিন, ফরিদুল হক খান দুলাল, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, মোকাব্বির খান ও মাশরাফি বিন মুর্তজা।

এ প্রসঙ্গে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী জানান, করোনা সংক্রমণ নিয়ে সংসদ সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ও সতর্কতা দুটোই বেড়েছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ এমপি করোনা টেস্ট করিয়েছেন। করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়েই তারা অধিবেশনে যোগ দেবেন। অধিবেশন কক্ষেও সকলকে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছর অর্থবিল বাজেট বাজেট পাস সংক্ষিপ্ততম

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর