Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তথ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া একটু বেশি হয়ে গেছে: ইরেশ যাকের


৩০ জুন ২০২০ ০০:৪৫

ঢাকা: ওয়েব সিরিজ নিয়ে দুই টেলিকম অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি দেওয়ার বিষয়টি ‘একটু বেশি হয়ে গেছে’ বলে মনে করছেন টেলিভিশন পোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অভিনেতা ইরেশ যাকের।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় এটি (ব্যাখ্যা চওয়া) একটু  বেশি হয়ে গেছে। সবাই ঢালাওভাবে সব কনটেন্ট… (প্রচার করে)। তাহলে শুধু দু’জন কেন? সব ওয়েব নয় কেন? তথাকথিত বিতর্কিত কনটেন্টগুলো একটি প্ল্যাটফর্মে প্রচার হয়েছে। যে মুহূর্তে আরও একটি প্ল্যাটফর্মে প্রচার হলো, ওমনি ব্যাখ্যা চাওয়া। তাহলে শুধু দুইটি প্ল্যাটফর্ম কেন? বাংলাদেশে বাকি যে প্ল্যাটফর্মগুলো আছে, তারা নয় কেন? এ বিষয়টি আমার কাছে বিভ্রান্তিমূলক মনে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৯ জুন) বিকেলে সারাবাংলা ডটনেটের নিয়মিত আয়োজন সারাবাংলা ফোকাস অনুষ্ঠানে ‘ওয়েব সিরিজে শ্লীলতা ও অশ্লীলতা বিতর্ক’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে আরও অতিথি ছিলেন গ্রে অ্যাডভার্টাইজিংয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ও কান্ট্রি হেড, বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন। অনুষ্ঠানটি একযোগে সারাবাংলার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব এবং বেসরকারি টেলিভিশন জিটিভি থেকে সরাসরি প্রচারিত হয়।

এর আগে, গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি’র প্ল্যাটফর্ম ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ওয়েব সিরিজের নামে সেন্সরবিহীন ‘কুরুচিপূর্ণ’ ভিডিও কনটেন্ট ওয়েবে আপলোড ও প্রচারের বিষয়ে অপারেটর দুইটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে টেলিভিশন পোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইরেশ যাকের বলেন, যে তিনটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে আলোচনা বা বিতর্ক হচ্ছে, তার মধ্যে দু’টি দেখে মনে হয়েছে এমন কিছু অঙ্গভঙ্গি রয়েছে, যে কারণে এগুলোকে আপত্তিকর মনে হতে পারে। ‘১৪ আগস্ট’ সিরিজের নামটাও এসেছে হয়তো একই প্ল্যাটফর্মের কারণে। যখন বিতর্ক শুরু হয়, তখন অন্যগুলোকেও আলাদা করা যায় না।

তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গণে সবসময় সুস্থ বিতর্ক ছিল। কী করতে চাই, কী করব, কী ভাবছি, দেশের ভবিষ্যত— সবকিছুই সংস্কৃতিতে উঠে আসে। আমার দর্শনের বিপরীতে যদি কেউ কথা বলে, তাহলে বিতর্ক হতে পারে। আর ওয়েবের এই বিতর্ক মোটেও তরুণ-প্রবীণের মধ্যেকার বিতর্ক নয়। তরুণদের অনেকে আছেন যারা এর বিপক্ষে, আবার প্রবীণদের অনেকেও এর পক্ষে।

ইরেশ যাকের বলেন, আমি এখানে কিছু কন্ট্রোল করতে পারব না। আমরা কন্ট্রোল করতে পারব না। অ্যামাজন প্রাইম কিন্তু সবকিছু দেখাতে দেবে না। নেটফ্লিক্সও সব কিছু দেখাবে না। জিও ব্লকিং নামে অপশন আছে। অনেক প্ল্যাটফর্মই তাদের অনেক কন্টেন্ট জিও ব্লকিং করে দেয়। এর ফলে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ওই কনটেন্ট দেখা যায় না।

টেলিভিশনের এই পরিচিত মুখ বলেন, আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গন খুবই ছোট। এখানে সবাই সবাইকে চিনি। টেলিভিশনের চেয়ে ওয়েবে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। রক্ষণশীল সমাজ হতে হতে দিন দিন আমরা আরও বেশি রক্ষণশীল হচ্ছি। কিন্তু একটা জিনিস দেখিয়ে বাকি সব জিনিসের ওপর যদি ছায়া পড়ে যায়, সেটি ভালো হবে না। কারণ ভালো কনটেন্ট দিয়ে ফাইট করা সম্ভব। বানানো তো অনেক কিছু যায়, কিন্তু নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসবে না। বিতর্কের জোয়ারে ভেসে গিয়ে আসল কাজ না করলে হবে না। যারা বিতর্কিত কনটেন্ট প্রকাশ করেছি, প্রয়োজনীয় মনে হওয়ায় তারা ক্ষমা চেয়েছে, দুঃখ প্রকাশ করছে, এটা হওয়া উচিত ছিল।

গত ২৫ জুন তথ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, জিপি ও রবির প্ল্যাটফর্ম (বায়োস্কোপ ও বিঞ্জ) ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ওয়েব সিরিজের নামে সেন্সরবিহীন নগ্ন, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ দৃশ্য, কাহিনী ও সংলাপ সংবলিত ভিডিও কনটেন্ট প্রচার করা হয়েছে।

দেশীয় প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তা ও নির্মাতারা বলছেন, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, হইচই, হটস্টার, উলু বা জি ফাইভের মতো ওয়েব কনটেন্টের বিদেশি প্ল্যাটফর্মগুলোতেও একই ধরনের কনটেন্ট প্রচারিত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কেবল দেশীয় প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে তারা দেখছেন বৈষম্য হিসেবে। এসব বিষয় নিয়েই সারাবাংলা ফোকাসে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

ইরেশ যাকের ওয়েব ওয়েব সিরিজ গাউসুল আলম শাওন গ্রামীণফোন গ্রে অ্যাডভার্টাইজিং তথ্য মন্ত্রণালয় বায়োস্কোপ বিঞ্জ রবি সারাবাংলা ফোকাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর