Saturday 14 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জেল আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে হলি আর্টিজান মামলা


১ জুলাই ২০২০ ১১:১৪ | আপডেট: ১ জুলাই ২০২০ ১২:১৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলায় বিচারিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ। পেপারবুক তৈরি শেষ হলে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের ও জেল আপিলের শুনানি শুরু হতে পারে। নিয়মিত কোর্ট খুললেই এ মামলার বিচার কাজ ত্বড়িৎ গতিতে শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হন। দেশের ইতিহাসের নৃশংসতম এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের মামলায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাত জঙ্গিকে ফাসিঁর আদেশ দেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এরপর ৫ ডিসেম্বর মামলার রায়ের কপি উচ্চ আদালতে পাঠান বিচারিক আদালত। জেল আপিল দায়ের করেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি।

হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির জন্য নিয়ম অনুযায়ী পেপার বুক তৈরি করতে হয়। পেপারবুক তৈরি হলে প্রধান বিচারপতি মামলার শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ দিলে সেখানে মামলার শুনানি হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সারাবাংলাকে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডটি আমাদের দেশ তো অবশ্যই, সারাবিশ্বেই আলোড়ন তৈরি করেছে। এই মামলায় আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। আগেই পদক্ষেপ নিতাম যদি কোভিড-১৯ এর দুর্যোগ না আসত।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই আইন কর্মকর্তা বলেন, করোনাভাইরাসের এই মহামারি যখন কেটে যাবে, সাধারণ আদালত যখন শুরু হবে, তখন অবশ্যই এই মামলাটি তালিকাভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেব। এবং যত দ্রুতসম্ভব শুনানি করা যায়, আমরা সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।

এ মামলায় একজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আপিল করবেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মামলার নথিগুলো সব হাইকোর্টে রয়ে গেছে। আমরা তো ঘরে আবদ্ধ। ভার্চুয়ালি আদালত করছি। মামলার নথি ভালোভাবে না দেখে এবং রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের কী পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সেটা না দেখে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, তবে আমি যদি পড়ে দেখি যে এই আসামিকে খালাস দেওয়া সঠিক হয়নি, তাহলে অবশ্যই আপিল করার জন্য পদক্ষেপ নেব।

চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানোর পেছনে উগ্রবাদী বা মৌলবাদী আইএসপন্থিদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তাদের শক্তি প্রদর্শন করা। তারা যে আমাদের দেশে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বা এই দেশেও তাদের যে শক্তি আছে, তা দেখানোর জন্যই তারা এই হামলা ঘটিয়েছে। বিদেশি নাগরিককে হত্যার কারণ ছিল সারাবিশ্বেই আলোড়ন তৈরি করা। তবে এই হামলার পর সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। জঙ্গিদের চিহ্নিত ও প্রতিহত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বহু জঙ্গি আস্তানা নির্মূল করা হয়েছে, জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর ফলে হলি আর্টিজানের মতো আর কোনো জঙ্গি হামলা দেখা যায়নি।

হলি আর্টিজান হামলা মামলার অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, এ মামলার পেপারবুক এখনো হাতে পাইনি। পেপারবুক তৈরি প্রায় শেষের দিকে। এর কাজ শেষ হলে প্রধান বিচারপতি পরবর্তীতে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। তখন শুনানি শুরু হবে।

এদিকে, হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আদালত থেকে এ মামলার নথি আসার পর পেপারবুক তৈরি করার জন্য বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এর মধ্যে পেপারবুক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। তবে এখনো হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়নি।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে  সেনা-কমান্ডো অভিযানে ঘটনাস্থলে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাত জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন— গাইবান্ধার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, নওগাঁর আসলাম হোসেন ওরফে আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ, কুষ্টিয়ার আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, জয়পুরহাটের হাদীসুর রহমান ওরফে সাগর, বগুড়ার রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও রাজশাহীর শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে।

জেল আপিল মামলা শুনানি হলি আর্টিজান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর