ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোরবানি পশুর হাট বসবে না: আতিকুল
২ জুলাই ২০২০ ২০:৫৯
ঢাকা: জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোরবানি পশুর হাট না বসানো হবে না বলে জানিয়েছেন না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের কথা ভেবে যেমন কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিতে হবে, তেমনি জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তারা হাট বসাবেন না।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকেলে ডিএনসিসির নগর ভবনে গণমাধ্যমের উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, আমার কাছে বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে ফোন আসছে। তারা বলছেন, আমরা যদি ঢাকার পশুর হাট বন্ধ করে দেই, তবে তাদের কী হবে! এটিই কিন্তু এখন বাস্তবতা। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কিন্তু একটি বছর অপেক্ষা করে থাকে এই কোরবানি পশুর হাটের জন্য। তাদের অনেকেই পশু পালন করে বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেন। সেইসঙ্গে এটিও সত্য— আমাদের শহরে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে যদি পশুর হাট বসে, সেটি কিন্তু জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য কিছু কিছু সিদ্ধান্ত আমি পরিবর্তন করতে বলেছি।
মেয়র বলেন, হাট ইজারা দিয়ে হয়তো কোটি টাকা আয় করা যাবে। কিন্তু টাকার চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই আমি ঢাকার বাইরের দিকে তুলনামূলক কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হাট বসানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি, যেন ব্যাবসায়ীরা পশু বিক্রিও করতে পারে, আবার জনস্বাস্থ্যও বিবেচনায় রাখা যায়।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের তেজগাঁও, আফতাবনগর, ভাষানটেক এলাকায় বড় হাট বসে প্রতিবার। সেখান থেকে আমাদের অনেক টাকা আয়ও হতো। কিন্তু এ বছর করোনা বিবেচনায় আমরা এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এসব স্থানে হাট বসতে দেবো না।
অন্যান্য এলাকার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, উত্তরা ১০, ১১ ও ১২— এই তিনটি সেক্টরে বড় হাট বসত। গত বছর এই হাটের ইজারা ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কিন্তু এ বছর এখানে আমরা হাট বসতে দেবো না। উত্তরাবাসীর জন্য উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন এলাকায় বড় হাট বসবে। তারা সেখান থেকে পশু কিনতে পারবেন এবং ওই এলাকায় মানুষের বসবাসও কম।
মেয়র জানান, মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের জন্য বসিলায় একটা হাট দেওয়া হবে। এ ছাড়াও হাট থাকবে পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী ও ১০০ ফুট সড়কের সাইদ নগর এলাকায়, কাউলায়। গাবতলীতে স্থায়ী পশুর হাটটিও থাকবে।
তবে যেখানেই হাট বসুক না কেন, সব হাটেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করব, শারীরিকভাবে দুর্বল, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা যেন পশুর হাটে না আসে এবার। ইজারদারদের বলা থাকবে, যেন পশুর হাটে ন্যূনতম ৫ ফুট দূরে দূরে গরু রাখার ব্যবস্থা করে তারা। হাটে পর্যাপ্ত বেসিন ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে, জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে একটু পর পর মাইকিং থাকতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব হাটে ম্যজিস্ট্রেট টহল থাকবে। ইজারাদারদের সতর্ক থাকতে হবে, আমাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তা না করলে ইজারা বাতিল করা হবে।
কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে মেয়র বলেন, বরাবরের মতো এবারও ডিএনসিসি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করতে প্রস্তুত। তিনি নগরবাসীকে অনুরোধ করে বলেন, আপনারা সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেবেন, কোনো অবস্থাতেই বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না। ইনশাআল্লাহ আমরা এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা উত্তরের সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হব।
কোরবানির পশুর হাট ডিএনসিসি মেয়র ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পশুর হাট মেয়র আতিকুল মেয়র আতিকুল ইসলাম