দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন রণতরীকে ঘিরে উত্তেজনা
৪ জুলাই ২০২০ ২০:০২
দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের পাঁচ দিনব্যাপী সামরিক মহড়ার মধ্যে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমানবাহী রণতরী’র অবস্থানকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। খবর রয়টার্স।
শনিবার (৪ জুলাই) মার্কিন নৌবাহিনী’র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মুক্ত ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিকের সমর্থনে ইউএসএস-নিমিটজ ও ইউএসএস-রোনাল্ড রিগ্যান দক্ষিণ চীন সাগরে মহড়া ও অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে, একই সাগরের প্যারাসেল দ্বীপের কাছাকাছি বুধবার (১ জুলাই) থেকে চীনেরও নৌ মহড়া শুরু হয়েছে। এই প্যারাসেল দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। রোববার (৫ জুলাই) বেইজিংয়ের ওই নৌ মহড়া শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীগুলো শনিবার (৪ জুলাই) দক্ষিণ চীন সাগরের ঠিক কোন অংশে মহড়া চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি – বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এমনকি, মার্কিন নৌ বাহিনীর বিবৃতিতেও মহড়ার নির্দিষ্ট স্থানের ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়নি।
সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলো প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম অংশেই মহড়া করে থাকে। সম্প্রতি ওই এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিমানবাহী রণতরীকে একসঙ্গেও দেখা গেছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চীন সাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চীনের সঙ্গে এর প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরোধ থাকলেও বিতর্কিত এ জলসীমার প্রায় ৯০ শতাংশই মূলত বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে। চীন তাদের নৌ মহড়ার বিষয়টি আগে থেকেই ঘোষণা দিলেও, মার্কিন নৌ বাহিনী শনিবার (৪ জুলাই) হঠাৎ দক্ষিণ চীন সাগরে দুটি রণতরীর মহড়ার খবর দিল।
পাশাপাশি, বেইজিং প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ চীন সাগর অংশে উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে ওয়াশিংটন। বুধবার থেকে শুরু হওয়া চীনের পাঁচ দিনব্যাপী নৌ মহড়ারও সমালোচনা করেছে তারা। চীনের এই নৌ মহড়ার ব্যাপারে সমালোচনা এসেছে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের তরফ থেকেও। এ ধরনের মহড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে বলে তার সতর্ক করেছে।
জবাবে, বেইজিং ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ওয়াশিংটনকে দোষারোপ করেছে। গত কয়েক বছরে তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের অধিক উপস্থিতি নিয়েও ধারাবাহিক আপত্তি জানিয়েছে বেইজিং।
অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস, বাণিজ্য চুক্তি এবং হংকং নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে বিতর্কিত জলসীমায় ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের পাল্টাপাল্টি নৌ মহড়া দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে ধারণা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।