দুর্যোগ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ‘ব্রি ৮৯’ পেয়ে সন্তুষ্ট কৃষক
৫ জুলাই ২০২০ ১১:০৫ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০২০ ১২:৩৪
মেহেরপুর: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৮৯ নিয়ে মেহেরপুরের চাষীদের মধ্যে ধান আবাদে নতুন আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বেশি ফলনশীল এ জাত সদ্য সমাপ্ত বোরো মৌসুমে ফলন আর ঝড়-বৃষ্টি মোকাবেলার মধ্য দিয়ে চাষীদের আস্থা অর্জন করেছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য চাহিদা পূরণে এ জাতের ধানকে আশার আলো মনে করছেন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তারা।
চাষী ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত বোরো মৌসুমে গাংনী উপজেলার শিশিরপাড়া মাঠে বীজ উৎপাদন প্লটে ব্রি ধান ৮৯ আবাদ করে স্বদেশ সীড নামের একটি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতি বিঘায় ৩০ মণের বেশি ফলন হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। সার্বিক দিক বিবেচনায় আগামি বোরো মৌসুমে এ জাতটি চাষীদের কাছে নতুন আস্থার প্রতীক হিসেবে দেখা যাবে বলে মনে করছেন বীজ উৎপাদনকারী কৃষকরা।
ব্রি ধান ৮৯ আবাদকারী কৃষক শিশিরপাড়া গ্রামের জিনারুল ইসলাম দিপু বলেন, ধান গাছের উচ্চতা ব্রি ধান ২৮ এর চেয়ে কিছুটা বেশি। তবুও ঘূুর্ণিঝড় আম্পানের মতো দুর্যোগে ধান গাছ হেলে পড়েনি। শিষ থেকেও ধান ঝড়েনি। এ বিষয়টি চাষীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাটা মাড়াই ব্যয় কমেছে এবং গো খাদ্যের জন্য বিচুলি তৈরি সম্ভব হচ্ছে। মাঝারি চিকন এ ধানের চাল খেতে সু-স্বাদু ও ভাত ঝরঝরে। চাষাবাদ পদ্ধতি ও খরচ স্বাভাবিক। অপরদিকে ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে এক সপ্তাহ আগে এ ধান কাটা যায়। ফলন অন্যান্য জাতের চেয়ে অনেক বেশি তাই এ জাতের ধান আবাদ খুবই লাভজনক।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ব্রি ধান ৮৯ আবাদের সার্বিক বিষয় আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। এ জাতটি খুবই দুর্যোগ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল। যা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উত্তরণ ও ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটাতে সময়োপযোগি একটি জাত। ১৯৯৪ সালে উদ্ভাবিত ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে এ জাতটি বেশি জনপ্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
বিগত ৪০ বছরে দেশে ধান আবাদ তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে কৃষিবিদ কেএম শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘চালের চাহিদা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে ব্রি ধান ৮৯ জাতটি আবাদ এখন সময়ের দাবি। ভালোভাবে আবাদ করতে পারলে হাইব্রিড জাতের কাছাকাছি ফলন দিতে সক্ষম এ জাতটি।’