Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুনে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৪০ শতাংশ, প্রাণহানি ৩৬১ জনের


৫ জুলাই ২০২০ ১৭:১৬

ঢাকা: গত মে মাসের তুলনায় জুনে সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সারাদেশে সড়কে ৩৬১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ৩৪৮ জন। মে মাসে যেখানে ২১৩টি দুর্ঘটনায় ২৯২ জন নিহত হয়েছিলেন; সেখান জুন মাসে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় ৩৬১ জনের মৃত্যু হয়। এই হিসাবে জুনে দুর্ঘটনা ৩৯.৪৩ শতাংশ এবং প্রাণহানি ২৩.৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

রোববার (৫ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব জানা গেছে। দেশের ৭টি দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন মাসে দেশে ২৯৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬১ জন নিহত এবং ৩৪৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫৭ জন নারী ও ৩২ শিশু রয়েছে। এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি (৯৪ জন) প্রাণহানি ঘটেছে। যা মোট নিহতের ২৬.০৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৪.৬৮ শতাংশ।

এছাড়া দুর্ঘটনায় ৭৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১.০৫ শতাংশ। পাশাপাশি যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন, অর্থাৎ ১৩.৫৭ শতাংশ। এই সময়ে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত ও ২৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। আর ৬টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ জন।


রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি (৪৪.১০%) জাতীয় মহাসড়কে, ৯২টি (৩০.৯৭%) আঞ্চলিক সড়কে, ৫৩টি (১৭.৮৪%) গ্রামীণ সড়কে এবং ২১টি (৭.০৭%) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার বেশিরভাগই (২৯.৬২ শতাংশ) ঘটেছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে ২১.৫৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ২০.৫৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪.৪৭ শতাংশ খুলনা বিভাগে ১০.৭৭ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ১০.৪৩ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৩.৭০ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ১০.১০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮.৪১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

করোনাকালেও থামেনি সড়কের ‘মহামারি’, ২ মাসে ৪৩০ প্রাণহানি

 

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ১০টি বিষয় চিহ্নি ত করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো ইত্যাদি।


সড়ক দুর্ঘটনারোধে সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বাড়ানো, পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে আলাদা পার্শ্বরাস্তা তৈরি, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধসহ ইত্যাদি।

প্রতিবেদনের মন্তব্যে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ বিষয়ক পদক্ষেপসমূহের মধ্যে একমাত্র জনসচেতনতা সৃষ্টি ছাড়া অন্য সব বিষয় প্রাতিষ্ঠানিক। যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের এবং এর সাফল্য নির্ভর করে গণপরিবহন খাতের সুশাসনের উপর। তাই রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মনে করে, সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধ বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

প্রাণহানি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়কে দুর্ঘটনা সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর