করোনাকালে নতুন মামলার বিচার কাজ চললেও পুরাতন মামলায় প্রায় শূন্য
৮ জুলাই ২০২০ ০৮:৩১
ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সারাদেশে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে গুরুপূর্ণ মামলার শুনানি গ্রহণের ব্যবস্থা করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রথমের দিকে শুধুমাত্র জামিন শুনানি করতে পারবে বলে জানালেও পরে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়েরের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে মামলার জামিন শুনানি ও মামলা দায়ের করা ছাড়া অন্যান্য সব কার্যক্রম এখনও বন্ধ।
অধিকাংশ আইনজীবী জানান, একটি মামলার শুধু জামিন হওয়াটাই প্রধান কাজ নয়। প্রোডাকশন মামলা অর্থাৎ (নতুন মামলার) ক্ষেত্রে জামিন দেওয়া হলেও পুরাতন মামলায় সেটা হচ্ছে না। করোনায় আগে যে মামলাটির সাক্ষী পর্যায়ে ছিল অথবা রায় হয়ে গেলে আসামি খালাস পেতো, সেটা এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ছোট মামলাগুলোতে জামিন হলেও বড় এবং আলোচিত মামলায় জামিন হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
জানা যায়, গত ১১ মে থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩৫ কার্যদিবসে সারা দেশে অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে ৪৯ হাজার ৭৬২ জন আসামির জামিন মঞ্জুর হয়েছে। গত ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই সারাদেশে অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে ১০ হাজার ৮৬৬ টি জামিন-দরখাস্ত নিষ্পত্তি এবং ৪ হাজার ৯৬০ জন আসামির জামিন মঞ্জুর হয়েছে। এছাড়াও এ পর্যন্ত সমাজসেবা অধিদফতর এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় আভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ৫৮৩ শিশুকে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজাদ রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ছোট অপরাধীদের জামিনের সংখ্যা একটু বেশি। তবে দাগি কিংবা আলোচিত বড় মামলায় কোনো আসামির জামিন দিচ্ছেন না আদালত। এর আগে মাদকের মামলাগুলোতে ১০/১৫ দিন জেল খেটে জামিনে বের হতো আসামিরা। আর এখন ৪/৫ দিন পর ভার্চুয়াল কোর্ট তাদের জামিন দিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মামলায় আসামিদের জামিন হতে যে সময় লাগতো, তা এখন কিছুটা কম লাগছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আসামিদের জামিনের সংখ্যা বেশি হচ্ছে।’ এর কারণ হিসেবে তিনি করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করেন।
আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ সারাবাংলাকে জানান, অন্যান্য সময়ের চেয়ে বড় ও আলোচিত মামলাগুলোতে তুলনামূলক জামিন কম হচ্ছে। করোনাভাইরাস আসার পর থেকে বড় মামলাগুলোর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় না। মামলার ট্রায়াল, সাক্ষ্যগ্রহণ, বদলি মামলার জামিনসহ অন্যান্য সবকিছুও বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যে মামলায় অনেক আগেই জামিন হওয়ার কথা, সেখানে অনেক সময় লাগছে। এতে করে ভুক্তভোগীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ভার্চুয়াল কোর্টে এসে ছোটখাটো সিআর মামলায় দায়ের করা যাচ্ছে না। ফলে আপরাধীদের অপরাধ করার প্রবণতা দিনে দিনে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এছাড়া মামলার শুনানির সময় ইন্টারনেট সমস্যার কথাও জানান তিনি।