স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে প্রায় ৩ কোটি টাকার বিল চেয়েছিল রিজেন্ট
৮ জুলাই ২০২০ ১১:৫৩
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) চিকিৎসা ও নমুনা পরীক্ষায় নানা অনিয়ম-প্রতারণার অভিযোগে বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতাল দুই শাখার মাসিক খরচ বাবদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে প্রায় ৩ কোটি টাকার বিল চেয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতর সেই বিল দেয়নি।
এর আগে গত ১ জুন রিজেন্ট হাসপাতাল চেয়ারম্যান মো. সাহেদের সই করা এক চিঠিতে হাসপাতালের উত্তরা শাখায় ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও মিরপুর শাখায় এক কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে অনুরোধ করা হয়। হাসপাতালের দুই শাখার মাসিক খরচ হিসেবে উল্লেখ করা হয় টাকার এই অংককে। এ সময় সমঝোতা চুক্তি সংশোধন করে আগের সমঝোতার তারিখ থেকে এই খরচ রিজেন্ট হাসপাতালকে দিতে অনুরোধ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিানিক) ডা. আমিনুল বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে বিল চেয়েছে, কিন্তু আমরা তো দেইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমরা আমাদের চিকিৎসকদের প্রত্যাহার করে নিই।’ তবে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে প্রাথমিক সমঝোতা চুক্তিতে কী ছিল, তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ডা. আমিনুল হাসান।
এদিকে সরকারি সাহায্য পাওয়ার কথা অস্বীকার করে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে চিকিৎসক আমি কোনোদিনই পাইনি। একদিনের জন্য চিকিৎসক দিয়েছিল, তারপরে আর কোনোকিছু পাইনি।’
তবে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, শুরু থেকেই সবধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালে। কিন্তু তারা বিভিন্ন সময়ে চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তাই তাদের বারবার সমঝোতা চুক্তি বাতিল করতে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই বেলা ২টা থেকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে একটি দল প্রথমে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। এর আগে র্যাবের আরেকটি দল রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আটজনকে আটক করা হয় বলেও জানান সারোয়ার আলম।
এদিকে ৭ জুলাই নানামুখী অনিয়মের কারণে ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুযায়ী রিজেন্ট হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অধিদফতর বলছে, হাসপাতাল দুটি রোগীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিরাট অংকের টাকা আদায় করছে। অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাগিদ দেওয়া হলেও লাইসেন্স নবায়ন না করে আরও অনিয়ম করেছে বলে নানা অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে।
এ দিনই রিজেন্ট হাসপাতালের নানা অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনের নামে মামলা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এর মধ্যে গতকাল সোমবার (৬ জুলাই) রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের সময়ই আটজনকে আটক করা হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেদসহ বাকি নয়জন পলাতক রয়েছেন।
৩ কোটি টাকা বিল মাসিক খরচ রিজেন্ট হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদফতর