Monday 30 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানবপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার: প্রধানমন্ত্রী


৮ জুলাই ২০২০ ১২:৩৫ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২০ ১৬:২১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মানবপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির মুখোমুখী করা হয়েছে। দেশে-বিদেশে অবস্থানরত অন্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৮ জুলাই) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।

পাপুল কুয়েতের নাগিরক হলে আসন খালি হবে: প্রধানমন্ত্রী

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এসংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এর আগে সাত দিন বিরতির পর সকাল ১১টায় সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

সরকারি দলীয় বেনজীর আহমদ-এর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে কর্মহীন হয়ে পড়া বাংলাদেশি কর্মীরা যাতে করোনা পরবর্তী সময়ে পুনরায় কর্মে নিয়োগ পেতে পারে সেজন্য বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এই অন্তবর্তী সময়ে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের মাধ্যমে আমরা দুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়া প্রবাসী কর্মীদের মাঝে প্রায় ১১ কোটি টাকার ঔষধ, ত্রাণ ও জরুরি সামগ্রী বিতরণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে চাকুরিচ্যুত হয়ে কিংবা অন্য কোন কারণে বিদেশ ফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছি। এছাড়া, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীর পরিবারের উপযুক্ত সদস্যকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে বিনিয়োগ ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছি। এ সংক্রান্ত নীতিমালা ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শুধুমাত্র বৈধ ও নিবন্ধিত অভিবাসী মৃত কর্মীর পরিবারকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে-এর তহবিল হতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। করোনা মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নির্বিশেষে সকল প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য আমরা ৩ লাখ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ হতে প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। তবে এ চাপ প্রশমিত করার জন্য আমাদের সরকার বিভিন্নমুখী কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, চলাচলের অনুমতির বিষয়ে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং কুটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে আমি কতিপয় রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানের নিকট এ বিষয়ে পত্র প্রেরণ করেছি।

এছাড়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও এয়ারলাইন্সের আবেদনের প্রেক্ষিতে সীমিত পরিসরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে বিমান। ১০ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় যৌথভাবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করছে। আমাদের সরকারের গৃহীত খাদ্য ও চিকিৎসা কূটনীতির আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি এবং ঔষুধ প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমাদের প্রতিবেশি অন্যান্য দেশসমূহে যেখানে প্রায় লক্ষাধিক প্রবাসী শ্রমিক ফিরে এসেছেন, সেখানে আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র ২২ হাজার প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত সময়োযচিত কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে ফিরে আসা প্রবাসীর সংখ্যা এখনো কম রয়েছে। আমাদের সরকার ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের টেকসই পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রবাসীদের যথাযথ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি ডাটাবেজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

এছাড়া, যারা পুনরায় বিদেশে যেতে সক্ষম তাদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রবাসীদের বিদেশে চাকুরি ধরে রাখা, নতুন নতুন প্রফেশনে যোগদান, কৃষিক্ষেত্রে নিয়োগ এবং এন্টারপ্রেইনার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে গমনাগমনের সুবিধার্থে আমরা ইতোমধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, এয়ার অ্যারাবিয়া এবং এমিরেটসকে বাংলাদেশে নিয়মিত বিমান চলাচলের অনুমতি প্রদান করেছি। তাছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-লন্ডন রুটে বিমান চালু করা হয়েছে। মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা চলাকালীন সময়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরে প্রাপ্ত ২ লাখ ১৫ হাজার আবেদনের অধিকাংশ পাসপোর্ট মুদ্রণ করে আমরা বিদেশস্থ বিভিন্ন মিশনে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এছাড়া পাসপোর্ট না থাকার কারণে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য যে সকল পাসপোর্ট মুদ্রণের অপেক্ষায় রয়েছে তা দ্রুত মুদ্রণ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মানবপাচার সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর