Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মোবাইল টাওয়ার শেয়ারিং দরপত্র এ মাসে


৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:৩৭

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকাঃ দশের মোবাইল টাওয়ার পরিচালনার জন্য চারটি কোম্পানি নির্বাচন করতে চলতি মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। মুলত অবকাঠামোর সবোর্চ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা, কোম্পানিগুলোর পরিচালন ব্যয় কমানো, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও মাটির গুণাগুন ঠিক রাখতেই এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে বিটিআরসির উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা জানান।

বিজ্ঞাপন

ওই কর্মকর্তা জানান, এ জন্য টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইনেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর জন্য পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের যে সুবিধা ছিল তা আর থাকছে না।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, আমরা টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছি। কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, গ্রাহকদের সবোর্চ্চ সুবিধার কথা ভেবে টাওয়ার শেয়ারিং-এর ক্ষেত্রে আমরা আলাদা চারটি সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের মালিকানাধীন প্রায় ৩৫ হাজার টেলিকম টাওয়ার রয়েছে। পৃথক টাওয়ার শেয়ারিং কোম্পানি চালু হলে টেলিকম টাওয়ারের সংখ্যা ২৫ হাজারে নেমে আসবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ার টেলিকম কোম্পানি আজিয়াটা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশে টাওয়ারের ব্যবসা করছে। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বিভিন্ন টেলিকম সংস্থার প্রায় ৯ হাজার টাওয়ার ব্যবস্থাপনা করছে। পাশাপাশি টাওয়ার শেয়ারিংয়ের বেশ কিছু কাজ এই কোম্পানিটি করছে।

বিজ্ঞাপন

টেলিকম শেয়ারিং টাওয়ার নীতিমালা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে লাইসেন্সের মেয়াদ হবে ১৫ বছর। প্রাথমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারে অনুমোদনক্রমে প্রয়োজনীয় ফি ও চার্জ প্রদানের মাধ্যমে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। লাইসেন্স প্রাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে অপারেশন শুরু করতে হবে। নির্বাচিত কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্সের জন্য এককালীন ২৫ কোটি টাকা দিতে হবে। পরে প্রতি বছরের জন্য ৫ কোটি টাকা করে বার্ষিক ফি দিতে হবে।

প্রথম বছর বিটিআরসির সঙ্গে লাইসেন্স প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোকে কোন ধরনের রাজস্ব শেয়ার করতে হবে না। তবে দ্বিতীয় বছর থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে রাজস্ব শেয়ার করতে হবে। এ ছাড়া দরপত্রে অংশ নিতে আগ্রহী কোম্পানিগুলোকে বিটিআরসির অনুকূলে এক কোটি টাকার ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার দিতে হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, যে প্রতিষ্ঠান টাওয়ার পরিচালনার লাইসেন্স পাবে, তাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা থাকতে পারবে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ। বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানা হতে হবে দেশীয় কোম্পানির। অর্থাৎ এসব কোম্পানিতে দেশি-বিদেশি যৌথ বিনিয়োগ থাকবে।

২০১৫ সালে তৃতীয় পক্ষ কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মোবাইল ফোন টাওয়ার ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। এ জন্য তখন একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হয়। তাতে দুটি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

এ সময় গ্রামীণফোন, বাংলালিংক-এর মূল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দুটি প্রতিষ্ঠানকে সব টাওয়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিলে বাজারে ডুয়োপলি বা দুটি প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্য ও অদক্ষতা তৈরির সুযোগ করে দেবে। তাই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ও কারিগরি সক্ষমতা আছে এমন প্রতিষ্ঠানই যাতে টাওয়ার তৈরি করতে পারে, এমন সুযোগ থাকা উচিত। এতে বাজার সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাও নিশ্চিত হবে।

পরে বিটিআরসির সবশেষ কমিশন বৈঠকে দুটির পরিবর্তে চার কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য টাওয়ার পরিচালনায় যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে ‘বিউটি কনটেস্ট’ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলেও জানানো হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটর ও ওয়াইম্যাক্স অপারেটররা সরাসরি টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে না। তবে কোনো আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত অপারেটরের শেয়ার থাকলে এবং ওই প্রতিষ্ঠান যদি লাইসেন্সের জন্য বিবেচিত হয় তাহলে আগেই শেয়ার ছাড়তে হবে।

সারাবাংলা/এইচএ/এমআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর