Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শৃঙ্খলায় নতুন আইন প্রণয়নের তাগিদ


১১ জুলাই ২০২০ ২২:৪৬

ঢাকা: দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শৃঙ্খলায় নতুন আইন প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে করতে কমপ্যাক্ট ল প্রয়োজন। যে আইন চিকিৎসা সেবা গ্রহীতা, সেবা দাতা ও ব্যবস্থাপকের অধিকার সংরক্ষণ করবে। পাশাপাশি জবাবদিহিতা-স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং দুর্নীতি ও সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।’

শনিবার (১১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় ‘মেডিকেল নেগলিজেন্স অ্যান্ড ইসপ্যাক্ট অন হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবইনারে অংশ নিয়ে বক্তারা নতুন আইন প্রণয়নের তাগিদ জানান। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম এই ওয়েবইনারের আয়োজন করে। এতে সঞ্চালনা করেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. জিয়া হায়দার। স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম’ নিয়মিত এই সাপ্তাহিক ওয়েবইনারের আয়োজন করে আসছে।

বিজ্ঞাপন

হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের একটি চিকিৎসা সুরক্ষা আইন হতে হবে। যে আইনটি তিন পক্ষের অধিকার সুরক্ষা করবে। কোভিডের সময় আমরা চারটা সমস্যার মুখোমুখি— করোনাভাইরাস, অদক্ষতা-অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। আজকের পৃথিবীতে ব্যক্তি তার পক্ষে কোনো কিছুই করা সম্ভব না, নির্ভর করে সে যে ব্যবস্থাপনার ভেতর দিয়ে কাজ করবে তার ওপরে। রাষ্ট্র চাচ্ছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা বেসরকারি খাতে চলে যাক।’

তিনি বলেন, ‘রিজেন্ট একটি প্রতারক প্রতিষ্ঠান। গত ছয় বছর যাবত লাইসেন্স নেই। তার সঙ্গে সরকারি একটি এমওইউ করল। সেই অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন, ডিজি হেলথ ছিলেন। সরকার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমওইউ করছে, সেই প্রতিষ্ঠানটি বৈধ না অবৈধ তারা এইটুকু দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না। তার মানে যাদের ওপর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তারা জানেন না তাদের কাজ কী।’

বিজ্ঞাপন

ডা. লেলিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মেডিকেল নেগলিজেন্সি ঘটনা ঘটেছে কোভিড-১৯ আসার পরে। হাসপাতালে রোগী ভর্তি হতে পারছে না। সিদ্ধান্ত হলো করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি হবে। এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকরা ভুলে গেলেন, প্রজ্ঞাপন জারি করলে তার সঙ্গে আরও যে ঘটনা ঘটবে সেসব সমাধান করার জন্য অনেকগুলো বিধিবিধান থাকা দরকার। এই অবস্থা থেকে বের আসার জন্য প্রয়োজন আইনের শাসন।’

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ব্রি. জেনারেল আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে। নেগলিজেন্সি করে অনেকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ২৫ শতাংশ চিকিৎসক সময় মতো অফিসে আসেন না এবং সময়ের আগেই বের হয়ে যান। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হাসপাতাল পরিদর্শন বাড়াতে হবে। চিকিৎসকদের কাছ থেকে তাদের সমস্যা শুনতে হবে এবং পোস্টিং, ট্রান্সফার ও প্রমোশন জটিলতা দূর করতে হবে।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজ বলেন, শিক্ষিত পরিবারেও এক ধরনের স্টিগমা আছে— আমরা পোস্টমর্টেম করতে দিতে চাই না। যে কারণে অনেক সময় নেগলিজেন্স প্রমাণ করা যায় না। মেডিকেল নেগলিজেন্স প্রমাণ করার জন্য দুজন চিকিৎসকের সমর্থন দরকার হয়। ডিজি হেলথ কিংবা তার ক্ষমতায়নে কোনো ব্যক্তি ছাড়া মামলা করা যায় না। এসব মিলিয়ে আমরা একটি বলয় তৈরি করেছি যাতে কোনোভাবেই কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেতে না পারে।’

সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দেশে আইন আছে। আমি মনে করি সেসব আইন যেমন সংশোধন করা দরকার। একইসঙ্গে চিকিৎসা খাতের জন্য একটি কোডিফাই ল দরকার। একটি বড় দুর্বলতা হলো সুপ্রিম কোর্ট আইন বিভাগকে বলতে পারে না যে, এ রকম একটি আইন করো। কেবল বলতে পারে এ রকম একটি আইন হওয়া দরকার। আইনি জটিলতার কারণে এ কিছুর পরেও সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। অথচ তার রিপোর্টের কারণে কারও মৃত্যু হলে সম্পূর্ণ দায় তার।’

কমপ্যাক্ট ল নতুন আইন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্বাস্থ্যখাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর