Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিএসসিসির বাজেট ৬ হাজার কোটি টাকা, আয়ের নতুন খাত ১৯টি


১২ জুলাই ২০২০ ০৯:৩৩

ঢাকা: ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। যা ২০১৯-২০ অর্থ বছরের চেয়ে ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা বেশি।

গত অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিলো ৩ হাজার ৬৩১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ৫২৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। তবে উন্নয়নের লক্ষ্যে গত অর্থ বছরের চেয়ে ৬৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়িয়ে এবারের বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সেই সঙ্গে কর আদায়ের মাধ্যমে কাঙ্খিত আয় অর্জনে এবার যুক্ত করা হয়েছে ১৯ টি নতুন খাত।

বিজ্ঞাপন

গত ৭ জুলাই ডিএসসিসির দ্বিতীয় বোর্ড সভায় এ প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে অনুমোদিত এ বাজেট এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহ মো. এমদাদুল হক।

এমদাদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন হয়েছে। তবে এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। তবে দু-চারদিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে। অর্থাৎ প্রস্তুতি শেষ হলে চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে।’

তবে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে এখনই আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হলে তখন সব কিছু জানতে পারবেন। এখন এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না।

প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের খাত: ডিএসসিসির প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে ধরা হয়েছে- সরকারি ও বৈদেশিক উৎস। এ খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছর ছিল ২ হাজার ৪৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৭০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার ও বৈদেশিক উৎস থেকে আয়ের মধ্যে সরকারি মঞ্জুরী (থোক) ৫০ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ মঞ্জুরী থেকে ১০০ কোটি টাকা এবং সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প থেকে ৪ হাজার ৭৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

এরপরই গুরুত্বপূর্ণ আয়ের খাত হিসেবে ধরা হয়েছে রাজস্ব আয়। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬ কোটি ২ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ৯৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেট এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৫৫ কোটি ৭৬ লাখ।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের মধ্যে হোল্ডিং করা ধরা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা, বাজার সালামী ১৬৫ কোটি; বাজার ভাড়া ৫০ কোটি; ট্রেড লাইসেন্স ১০০ কোটি, রিক্সা লাইসেন্স ফি ২৪ কোটি; প্রমোদ কর (সিনেমা) ৪০ লাখ; বিজ্ঞাপন কর ৫০ কোটি; বাস/ট্রাক টার্মিনাল ১০ কোটি; কোরবানি পশুর হাট ১২ কোটি; ইজারা ৪৫ কোটি; জবাইখানা এক কোটি; রাস্তা খনন ফি ৪০ কোটি; যন্ত্রপাতি ভাড়া ১০ কোটি; শিশু পার্ক ১৫ লাখ; বিভিন্ন ফরম বিক্রিয় এক কোটি ৫০ লাখ; কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া ৩ কোটি; কবরস্থান, শ্মশানঘাট ৫০ লাখ; সম্পত্তি হস্তান্তর কর ৬০ কোটি; ক্ষতিপূরণ (অকট্রয়) ৬ কোটি; পেট্রোল পাম্প ২ কোটি ৮৯ লাখ; অন্যান্য ভাড়া ২ কোটি; ইমরারত নির্মাণ এবং পুন নির্মাণের জন্য আমদানির ওপর কর ১ কোটি; নগরীতে ভোগ, ব্যবহার বা বিক্রয়ের জন্য পণ্য আমদানির ওপর কর ১ কোটি; নগর থেকে পন্য রফতানির ওপর কর ১ কোটি; টোল জাতীয় কর ১২ কোটি; পেশা বা বৃত্তির ওপর কর ১ কোটি; বিবাহ, তালাক, দত্তক গ্রহণ ও যিয়াফত বা ভোজের ওপর কর ৬০ লাখ; পশুর ওপর কর ৬ লাখ; জনসেবামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য রেইট ১০ লাখ; সরকার কর্তৃক আরোপিত করের ওপর উপকর ১২ লাখ; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ ট্রেনিং সেন্টার প্রভৃতির ওপর কর ১ কোটি; মেলা, কৃষি প্রদর্শনী, শিল্প প্রদর্শনী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য জনসমাবেশের উপর ফিস ২০ লাখ; বাজারের উপর ফিস (ইজারা) ১ কোটি টাকা, টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ ফি ৫ কোটি টাকা, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ইত্যাদির নিবন্ধিকরণ ফি ১০ কোটি; করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত হোটেলে অবস্থানকারীর ওপর নগর কর ১ কোটি ৫০ লাখ; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে নিযুক্ত পিসিএসপির নিবন্ধন ও বাৎসরিক ফি ৯ কোটি; ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদানে রাস্তা ব্যবহারের ফিস ১২ কোটি ও অন্যান্য (ব্যাংকসুদ, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতুসহ) ১২ কোটি টাকা রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬ কোটি ২ লাখ টাকা।

এ ছাড়া অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটে এসে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

এর মধ্যে রয়েছে অপ্রয়োজনীয়, অব্যবহার্য সম্পদ বিক্রয় ও অন্যান্য খাত থেকে ৫০ লাখ; ঋণ আদায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, বেসরকারি দান/অনুদান ১ কোটি টাকা, স্থায়ী আমানতের সুদ হতে প্রাপ্ত আয় ২ কোটি টাকা, বিলুপ্ত ডিসিসির স্থিতি হতে প্রাপ্ত ৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই সেক্টর থেকে ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট ব্যয়ের খাত: প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয়ের সবচেয়ে বড় খাত হিসেবে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আর সমাপনি স্থিতি ধরা হয়েছে ২১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে অন্যান্য আনুষাঙ্গিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। এসব ব্যয়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ/ডিএসএল/মামলা সংক্রান্ত দায় ও অন্যান্য ১ কোটি টাকা; সালামী ফেরত ৫০ লাখ টাকা; গৃহ নির্মাণ ও অন্যান্য অগ্রিম ৫০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

বাজেটে পরিচালনা ধরা হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তার মধ্যে কর্মচারীদের প্রতিদান (বেতন, ভাতা ও অন্যান্য) ২৬৪ কোটি টাকা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস ৪০ কোটি টাকা; মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ২৪ কোটি টাকা; মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম (মনিটরিং/সার্ভাইলেন্সহ) ৩৫ কোটি টাকা; সরবরাহ ২১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা; ভাড়া, রেট ও কর ৩ কোটি টাকা, কল্যাণমূলক ব্যয় ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা; ভ্রমণ ও যাতায়াত ৫ লাখ টাকা; ডাক, তার ও দূরালাপনী ২০ লাখ টাকা; আতিথেয়তা এক কোটি টাকা; বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা; ফিস ২৪ কোটি টাকা; প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বীমা ৯০ লাখ টাকা; বীমা ২৫ লাখ টাকা; বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ ৮ কোটি টাকা; উচ্ছেদ কার্যক্রম ২০ লাখ টাকা; বিবিধ ব্যয় ১০ লাখ টাকা। এ দিকে প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে রাজস্ব আয়ের জন্য ১৯টি খাতকে করের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ডিএসসিসি। নতুন এ সব খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

তার মধ্যে ১. রিকশা লাইসেন্স ফি ২৪ কোটি টাকা; ২. ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর কর ৫ কোটি টাকা; ৩. নগরীতে ভোগ, ব্যবহার বা বিক্রয়ের জন্য পণ্য আমদানির ওপর কর ১ কোটি টাকা; ৪. নগর থেকে পণ্য রফতানির ওপর কর ১ কোটি টাকা; ৫. টোল জাতীয় কর ১২ কোটি টাকা; ৬. পেশা বা বৃত্তির ওপর কর ১ কোটি টাকা; ৭. বিবাহ, তালাক, দত্তক গ্রহণ ও যিয়াফত বা ভোজের ওপর কর ৬০ লাখ টাকা; ৮. পশুর ওপর কর ৬ লাখ টাকা; ৯. জনসেবামূলক কার্যসম্পাদনের ওপর কর ১০ লাখ টাকা; ১০. সরকার কর্তৃক আরোপিত করের ওপর কর ১২ লাখ টাকা; ১১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ট্রেনিং সেন্টার প্রভৃতির ওপর কর ১ কোটি টাকা; ১২. মেলা, কৃষি প্রদর্শনী, শিল্প প্রদর্শনী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও অন্যান্য জনসমাবেশের ওপর কর ২০ লাখ টাকা; ১৩. বাজারের ওপর ফি (ইজারা): ১ কোটি টাকা; ১৪. টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ ফি ৫ কোটি টাকা; ১৫. প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ইত্যাদির নিবন্ধিকরণ ফি ১০ কোটি টাকা; ১৬. করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত হোটেলে অবস্থানকারীর ওপর নগর কর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা; ১৭. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে নিযুক্ত প্রাইমারি কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিসিএসপি) নিবন্ধন ও বাৎসরিক ফি ৯ কোটি টাকা; ১৮. ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদানে রাস্তা ব্যবহারের ফি ১২ কোটি টাকা এবং ১৯. অন্যান্য (ব্যাংক সুদ, মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু) ১২ কোটি টাকা।

উপরিউক্ত এসব আয়ের খাত অতীতের কোনো বাজেটে পৃথকভাবে ছিল না। তবে এবারই প্রথম পৃথকভাবে এসব খাত আয় হিসেবে কেন অন্তর্ভুক্ত করা হলো সে বিষয়ে ডিএসসিসির সিইও এমদাদুল হক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি এখনও প্রক্রিয়াধীন। ঘোষণা হওয়ার পর বিস্তারিত জানতে পারবেন।’

টপ নিউজ ডিএসসিসি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বাজেট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর