Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুবাইয়ে সহস্র নারীকে পাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ গ্রেফতার ৩


১৩ জুলাই ২০২০ ০১:৪১

ঢাকা: দুবাইয়ের হোটেলে ‘লোভনীয়’ চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০ থেকে ২২ বছর বয়সী তরুণীদের প্রলুব্ধ করা হতো। তারা যেন সন্দেহ না করে, সেজন্য অগ্রিম বেতন হিসেবে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম পরিশোধ করা হতো। দুবাইয়ে যাওয়া-আসা বাবদ সব ধরনের খরচও বহন করতো দালাল চক্র। কিন্তু দুবাই যাওয়ার পরই বদলে যেত চিত্র। তাদের হোটেলে জিম্মি করা হতো। এরপর নাইট ক্লাবে নাচতে এবং পরবর্তী সময়ে তাদের যৌনপেশায় নিযুক্ত হতে বাধ্য করা হতো। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এমন একটি নারী পাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার তিন জন হলেন— আজম আলী, ময়না ও আলামিন হোসেন ডায়মন্ড।

রোববার (১২ জুলাই) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত আট বছরে এভাবে প্রলুব্ধ করে চাকরির নামে বাংলাদেশে থেকে এক হাজারের বেশি তরুণী ও কিশোরীকে দুবাইয়ে পাচার করেছে চক্রটি। তাদের দিয়ে নানা ধরনের অপরাধ করিয়েছে।

ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মানব পাচার একটি ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিকটিম থাকে দেশে, আর ক্রিমিনাল থাকে বিদেশে। আমরা দূতাবাসের সহযোগিতা নিচ্ছি। দুবাইতে এই চক্রের গডফাদার আজমের তারকাবহুল বিলাসবহুল হোটেলের সন্ধান পেয়েছি। ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স ক্লাব, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্র্যান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ারের অন্যতম মালিক আজম। এর মধ্যে তিনটি ফোর স্টার মানের, একটি হচ্ছে থ্রি স্টার মানের হোটেল।

সিআইডি’র এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে অর্ধশত দালালের মাধ্যমে অল্প বয়সী মেয়ে, বিশেষ করে ২০ থেকে ২২ বছর বয়সী মেয়েদের উচ্চ বেতনে কাজ দেওয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করত। দালালরা মেয়েদের প্রলুব্ধ করে নির্ধারিত দু’টি বিদেশি এয়ারলাইন্স এজেন্সির মাধ্যমে দুবাইতে পাঠাত। সেখানে যাওয়ার পরে তাদের প্রথমে ছোটখাটো কাজ দেওয়া হতো। এরপর জোর করে তাদের ড্যান্স বারে নাচতে বাধ্য করা হতো। যৌনপেশায় কাজ করতে বাধ্য করা হতো। না করতে চাইলে আটক রাখা হতো, তাদের খাবার দেওয়া হতো না, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। বৈদ্যুতিক শক পর্যন্ত দেওয়া হতো। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুবাই সরকার আমাদের দূতাবাসকে জানালে চক্রের গডফাদার আজমের পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠায়।

এদিকে, দেশে আসার পর আজম বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনের চেষ্টা করেন। নতুন পাসপোর্ট করে সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে তার আগে তার দুই সহযোগীসহ তাকে সিআইডি’র একটি দল আটক করতে সক্ষম হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজমের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ছয়টি হত্যা মামলাও রয়েছে।

ডিআইজি ইমতিয়াজ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গডফাদার আজম স্বীকার করেছেন যে গত আট বছরে তিনি সহস্রাধিক বাংলাদেশি তরুণীকে দুবাইয়ে পাচার করেছেন। এ বিষয়ে সিআইডি বাদী হয়ে গত ২ জুলাই রাজধানীর লালবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।

দুবাই থেকে ফেরা দুবাইয়ে তরুণীদের পাচার নারী পাচারকারী নারী পাচারকারী চক্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর