কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি, দুর্ভোগে মানুষ
১৩ জুলাই ২০২০ ১৯:১৭
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৪৬ ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার কবলে পড়া কর্মহীন মানুষের খাদ্য সংকটের পাশাপাশি দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিক মন্ডল জানান, ইউনিয়নের সব জায়গা বন্যা কবলিত হয়েছে। যাদের বাড়িতে থাকার উপায় নেই তারা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। বন্যা কবলিত মানুষেরা কেউ চুলা জ্বালাতে পারছেন না। তাদের জন্য শুকনো খাবার জরুরী হয়ে পড়েছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের খেয়ার আলগার চরের মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগের বন্যায় কষ্ট করে বাড়িতে ছিলাম। আবার ৫/৬ দিন থেকে পানি আরও বেড়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বাড়িতে থাকা হবে না। গরু, বাছুর, ছাগল, ভেড়া, হাস, মুরগী নিয়ে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।’
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুব আলী জানান, ইউনিয়নের প্রায় ৩২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় পরো ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে সড়কে অবস্থান নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারী কোন ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, সোমবার বিকেল ৩টার রেকর্ড অনুযায়ী কুড়িগ্রামে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে অন্যান্য নদীর পানিও। আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলার ৯ উপজেলায় বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৬০ মেট্রিক টন চাল, জিআর ক্যাশ ৪ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা দ্রুত বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।