Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে সাহেদের বিরুদ্ধে ৯১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা


১৩ জুলাই ২০২০ ১৯:২২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভুয়া শনাক্তকরণ রিপোর্ট সরবরাহ করে আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ৯১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঢাকার রাস্তায় তিন চাকার যাত্রী বহনকারী যানবাহনের (থ্রি-হুইলার) চলাচলের জন্য বিআরটিএ’র ভুয়া অনুমতিপত্র সরবরাহ করে এই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে নগরীর ডবলমুরিং থানার ধনিয়ালাপাড়া এলাকার মেসার্স মেগা মোটরস নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৩ জুলাই) বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ। মামলায় সাহেদ করিম ছাড়াও মেসার্স মেগা মোটরসের সাবেক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহকেও (৬০) আসামি করা হয়েছে।

মেগা মোটরসের ব্যবসায়িক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে থাকা সাইফুদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শহীদুল্লাহ ঢাকায় আমাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তার মাধ্যমে সাহেদ করিমের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়। সাহেদ নিজেকে কখনও প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, কখনও মন্ত্রী-এমপিদের ঘনিষ্ঠ আবার কখনও লে. কর্ণেল পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের কাছে পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের আমদানি করা মেগা ব্র্যান্ডের সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার গাড়ি ঢাকার রাস্তায় চলাচলের জন্য রুট পারমিট এনে দিতে পারবেন বলে জানালে, আমরা তার কথায় বিশ্বাস করি।’

তিনি জানান, রুট পারমিটের জন্য সাহেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কেটিএস লিমিটেডের প্রিমিয়ার ব্যাংকের হিসাব নম্বরে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ৭ মার্চের মধ্যে মোট ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে নগদে আরও ৩২ লাখ টাকাসহ মোট ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেয় সাহেদ করিম।

২০১৭ সালের ৫ মার্চ তারিখে থ্রি-হুইলার যান ঢাকার রাস্তায় চলাচলের জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সই করা একটি পরিপত্র মেগা মোটরসকে হস্তান্তর করা হয়। বিআরটিএ অফিসে যোগাযোগ করে তারা জানতে পারেন সেটি ভুয়া। এরপর সাহেদ করিমকে বিষয়টি জানালে তিনি আবারও অনুমতিপত্র এনে দেওয়ার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। বারবার অনুরোধ করলে সাহেদ করিম নিজে জিয়া উদ্দিনকে হুমকি-ধামকি দেন এবং এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ সাইফুদ্দিনের।

বিজ্ঞাপন

সাইফুদ্দিন আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে বুঝতে পারলাম, আমরা প্রতারণার শিকার। তখন আমরা শহীদুল্লাহকে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিই। কিন্তু সাহেদ করিমের সামাজিক অবস্থানের কথা ভেবে আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে ভয় পাচ্ছিলাম। তাকে নিয়মিত টক’শোতে দেখা যেত। প্রভাবশালী সাহেদ আমাদের আরও কোনো ক্ষতি করতে পারে ভেবে আমরা চুপ ছিলাম।’

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ’৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৪৬৮, ৪৭১, ৪০৬, ৪২০ ও ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রমাণ পাওয়ার পর র‌্যাব গত ৬ থেকে ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়। র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে আসতে শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেফতার এড়াতে সাহেদ আত্মগোপনে রয়েছে। তবে তাকে খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

চট্টগ্রাম মামলা রিজেন্ট হাসপাতাল সাহেদ করিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর