Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বন্যায় ১৭ জেলায় পানিবন্দি ৩ লাখ পরিবার, ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত’


১৪ জুলাই ২০২০ ১৯:৪৭

ফাইল ছবি

ঢাকা: আষাঢ়ের টানাবৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে গত কয়েকদিনের বন্যায় দেশের ১৭ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৭৪ পরিবার। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৭ জন। বন্যার পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে যাতে মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে যেতে পারে এজন্য বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে ৮ হাজার ২১০ টন চাল, নগদ ২ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, গো-খাদ্য কেনার জন্য ৪৮ লাখ টাকা এবং শিশুখাদ্য কেনার জন্য ৪৮ লাখ টাকা আমরা দিয়েছি। কোথাও কোথাও নদী ভাঙনের ফলে ঘরবাড়ি হারিয়েছে মানুষ। এজন্য ঘর মেরামতে ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯ লাখ টাকা নগদ দিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১২টি জেলা বেশি বন্যা কবলিত হয়েছে এবং সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে লোক উঠেছে, সেখানে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে ৫ লাখ টাকা করে মোট ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ টাকায় শুধু রান্না করা বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’ ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে ২০ হাজার ১০ জন লোক আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তিনি।

ডা. এনাম বলেন, ‘সরকারের ত্রাণ সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতা আছে। যত বড় দুর্যোগ আসুক না কেন, দুর্যোগ যতই দীর্ঘস্থায়ী হোক না কেন, দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার মতো সক্ষমতা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সরকারের আছে।’

বিজ্ঞাপন

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মার পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ার ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় পানির সমতল কমছে, এটা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।’

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলার পানি কমবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও রংপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, নওগাঁ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, গত ২৭ জুন থেকে যে বন্যা শুরু হয়েছিল সেটা আগাম বন্যা ছিল। আগাম বন্যা ৬/৭ তারিখ থেকে উন্নতি লাভ করেছে। কিন্তু ১১ জুলাই থেকে আবার পানি বেড়েছে। পানিটা ১৭ জুলাই সর্বোচ্চ বাড়বে। সেই বৃদ্ধিটা আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ স্থায়ী হবে। ২৩টি জেলায় বন্যা বিস্তৃতি লাভ করবে।’ মেঘালয়, চেরাপুঞ্জী, আসাম, ত্রিপুরা, চীন ও নেপালের পানি এসে দেশে এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের মাঠ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা যদি ত্রাণ প্রস্তুত ও বিতরণের কাজে অংশ নেয় তাহলে অতীতে যেমন বড় বড় বন্যা মোকাবিলা করেছি, একইভাবে এবারও মোকাবিলা করতে পারব। মানুষের দুঃখকষ্ট লাঘব করতে পারব।’

১৭ জেলায় ৩ লাখ পরিবার ত্রাণমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান পানিবন্দি বন্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর