কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, তীব্র খাদ্যসংকটে মানুষ
১৪ জুলাই ২০২০ ২২:২৩
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এ অবস্থায় জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের আড়াই শতাধিক চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ।
বন্যা কবলিত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দফায় বন্যা হলে সেখানকার মানুষ প্রায় দুই সপ্তাহ পানিবন্দি ছিল। দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়লে খাদ্যসংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে চুলা জ্বালাতে না পারায় রান্না করাও সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে শুকনো খাবারেরও ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে।
উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের আইড়মাড়ীর চরের আব্দুর রহিম জানান, গত বন্যায় ঘরে যা শুকনো খাবার ছিল তা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সেই বন্যা যেতে না যেতেই আবারও বড় বন্যা আসলো। খাবার নাই বললেই চলে। পানি আরও বাড়লে কোথায় উঠবেন সেই নিশ্চয়তাও নেই।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই বন্যাদুর্গত মানুষদের হাতে দীর্ঘদিন তেমন কাজ না ছিল। তার ওপর প্রথম দফা বন্যা চলে যাওয়ার সঙ্গে আবারও বন্যা আসলো। চরে বসবাসকারী বেশিরভাগই অভাবী মানুষ। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে। তাদের শুকনো খাবারের প্রয়োজন।
উলিপুর উপজেলার বেগমগন্ধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, সেই ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবারের ২৮ হাজার মানুষই পানিবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছে। ২য় দফা বন্যায় জেলা প্রশাসন থেকে ইউনিয়নের জন্য ৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বুধবার উত্তোলন করে বিতরণ করা হবে। এই ৫ টন চাল ১০ কেজি করে মাত্র ৫০০ পরিবারকে দেয়া যাবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম জানান, জেলায় বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৯ উপজেলায় ১৬০ মেট্রিক টন চাল, শুকনো খাবারের জন্য ৪ লাখ জিআর ক্যাশ, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ, গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রামে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।