Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজেটের প্রভাব নেই সয়াবিনের বাজারে


১৫ জুলাই ২০২০ ১১:০৪

ঢাকা: চলতি অর্থবছরের বাজেটে সয়াবিন ওয়েল কেক ও সয়াবিন প্রোটিন আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলেও ভোজ্যতেলের বাজারে এখনও সেই অর্থে প্রভাব পড়েনি। বাজারে বোতলবদ্ধ সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে পাইকারিতে খোলা সয়াবিনের দাম কিছুটা কমছে। কিন্তু খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সয়াবিন অয়েল কেক ও সয়াবিন প্রোটিন কনসেনট্রেট আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থে এখনও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সরিষা তেলের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে।

শুক্রবার (১০ জুলাই) কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে দেখা গেছে, বোতলবদ্ধ প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে ৫ লিটারে রুপচাঁদা ৪৮০ টাকা, তীর ৪৫৫ টাকা ও সেনা ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারটিতে খোলা সয়াবিন ৮০ টাকা ও পামওয়েল ৬০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছিল।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিব) তথ্য বলছে, শুক্রবার (১০ জুলাই) প্রতি লিটার সয়াবিন (খোলা) ৮৩ থেকে ৮৬ টাকা, ৫ লিটার (বোতল) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, ১ লিটার (বোতল) ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, পামওয়েল (খোলা) ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পামওয়েল (সুপার) ৭০ থেকে ৭৫ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। এক বছর আগের এই দিনে ( ১০ জুলাই ২০১৯)  প্রতি লিটার সয়াবিন (খোলা) ৭৭ থেকে ৮২ টাকা, ৫ লিটার (বোতল) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, ১ লিটার (বোতল) ১০০ থেকে ১০৬ টাকা, পামওয়েল (খোলা) ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, পামওয়েল (সুপার) ৬৬ থেকে ৭০ টাকা লিটারে বিক্রি হয়েছিল। সেই অর্থে এক বছরের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি আর পামওয়েলের দাম ৬ থেকে ৮ শতাংশ। বোতলবদ্ধ তেলের দাম প্রায় অপরিবর্তিত। আর মাস ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম কমেছে লিটারে ১ টাকার মতো। কিন্তু পামওয়েলের দাম রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত।

জানতে চাইলে কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের সোনালী ট্রেডার্সর মালিক আবুল কাশেম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বোতলের সয়াবিন তেলের দাম কমেনি। পামওয়েলের দামও আগের মতোই। তবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমেছে। লিটার বা কেজিতে দুই টাকা মাত্র।’ তিনি জানান, তার দোকানে পামওয়াল ৬৭ টাকা ও সয়াবিন ৮৫ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ সয়াবিন কেজিতে ২ টাকা কমেছে।

এই মার্কেটের আরেক পাইকারি দোকান বেঙ্গল’র ম্যানেজার মহিউদ্দিন জানান, খোলা সয়াবিন ৮০ টাকা ও পামওয়েল ৬১ লিটারে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিনের দাম কমেছে লিটারে ২ টাকা। আর বোতলের সয়াবিন তেলের দাম একই রয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ গোলাম মাওলা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলের বাজার অনেক কমে গেছে। বোতলের সয়াবিন তেলে এমআরপি দেওয়া থাকে। মিল মালিক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্রেড কমিশন- এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে তিন মাস অন্তর অন্তর বোতলের সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে। আন্তর্জাতিক বাজার, ভ্যাট ও ট্যাক্স অনুযায়ী বোতলবদ্ধ তেলের দাম আরও কমানো উচিত। বিশ্ববাজারে তেলের দাম এখন কম, পাইকারি বাজারেও কম রয়েছে; কিন্তু খুচরা বাজারে সেই প্রভাব পড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘সবকিছুরই দাম কম। আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম কমেছে। পাইকারি বাজারেও কমেছে। কারণ করোনায় মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে। কিন্তু খুচরা বাজারে ছয় মাস আগে যে দাম ছিল- তেলসহ সবকিছুর দাম ওইরকমই রয়ে গেছে। সরকারের উচিত পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে একজন বিক্রেতা কতটাকা লাভ করবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া।’

গোলাম মাওলা জানান, আগে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা মণে খোলা সয়াবিন পাইকারি বাজারে বিক্রি হতো। এখন তা কমে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকায় নেমেছে। মানভেদে সবধরনের সয়াবিনের দাম মণে অন্তত ১০০ টাকা কমেছে।

সয়াবিনের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজেট তো সবে পাস হয়েছে। এলসি করলে তিন মাস পর এর প্রভাব পড়ার কথা। আমরা অন্যান্য পণ্যের মতো সয়াবিনের বাজারও মনিটরিং করছি। বাজেটের পর নতুন করে বোতলের সয়াবিনের মূল্য নির্ধারণ হয়নি। আমরা বিষয়টি খেয়াল রাখছি। মূল্য নির্ধারণে সামনে হয়তো আমরা বসব।’

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শুধু বাজার দর মনিটরিং করে থাকি। আর সারাবছরই বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোজ্যতেলসহ বেশকিছু পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করি।’

আমদানি শুল্ক কাঁচামাল খোলা প্রভাব বাজার বোতলবদ্ধ সয়াবিন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর