কোরবানির লক্ষাধিক পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় শাহজাদপুরের খামারিরা
১৫ জুলাই ২০২০ ১৬:০৭
সিরাজগঞ্জ: মহামারী করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের খামারিরা কোরবানির পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। ঈদ উপলক্ষে লক্ষাধিক গরু উৎপাদন করলেও মিলছে না ক্রেতার দেখা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের জন্য পশু কিনতেও আসছেন না ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থায় লক্ষাধিক পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিতায় আছেন খামারিরা।
প্রতিবছর দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখে শাহজাদপুরের খামারি ও কৃষকরা। এবারও কোরবানি ঈদে শাহজাদপুর উপজেলার কয়েক হাজার খামারি উৎপাদন করেছেন প্রায় এক লাখেরও বেশি গরু। এছাড়া প্রায় ১০ হাজার ছাগল পালন করেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় ৫০ ভাগ পশু অবিক্রিত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবার ঈদের দু-এক মাস আগে থেকেই তাদের বাড়িতে এবং গরুর হাটে ঘুরে ব্যবসায়ীরা গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন হাটে তুলতেন। এবার সেই সংখ্যাও অনেক কম।
শাহজাদপুরের পশুর বড় হাট রয়েছে ৪টি। এসব হাট ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারে বিক্রির জন্য প্রতিদিন কয়েক হাজার গরু-ছাগল নিয়ে আসেন খামারিরা। কিন্ত কেনাবেচা একদম কম। ঈদুল আজহার আর মাত্র দু সপ্তাহ বাকি থাকলেও ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের তেমন দেখা মিলছে না।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ঈদের আগে উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৯০ হাজার গরু পালন করা হয়েছিল। খামারিরা লাভের মুখ দেখেছিল। এবার গতবারের তুলনায় গরুর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি। কিন্তু গরু কেনার মানুষ নেই।
শাহজাদপুর উপজেলার রতনকান্দী গ্রামের খামারি সাইফুল ইসলাম জানান, সারাবছর বাড়িতে গরু পালন করেন। তবে কোরবানির ঈদ আসলে লাভের আশায় গরুর সংখ্যা বাড়ান। এবারও তার খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১২টি গরু রয়েছে। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে দুশ্চিন্তাও ততোই বাড়ছে। যারা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জেলায় গরু বিক্রি করেন তারা অপেক্ষা করছেন বাজার পরিস্থিতি দেখার জন্য।
শাহজাদপুর উপজেলার পুরানটেপরি গ্রামে খামারি মুকুল শেখ বলেন, ‘গত বছর গরু বিক্রি করে মোটামুটি লাভ হয়েছিল। তাই এবারও গরু পালন করেছি। গো- খাদ্যের যে দাম বেড়েছে তাতে লোকসান হবে বলে মনে হচ্ছে। অন্য বছর আগেই ব্যবসায়ীরা বাড়ি আসত। এবার কেউ আসছেন না। দু-একজন আসলেও দাম অনেক কম বলছেন।’