‘করোনা মোকাবিলায় সমন্বয়ের অভাব’
১৬ জুলাই ২০২০ ০১:২৩
ঢাকা: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রথম থেকেই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। যার কারণে প্রথম দিকে দেশের নাগরিকরা চিকিৎসাসেবা পাননি। পরে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তখন ডাক্তাররা চিকিৎসা সেবা দেন। একইসঙ্গে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বয়হীনতা ছিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার ( ১৫ জুলাই) বিকেলে করোনাকালে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি-সারাবাংলা ফোকাস অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কলসালটেন্ট অধ্যাপক আকরাম হোসেন, স্বাচিপের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড ১৯ এর মুখপাত্র ডা. আয়েশা আক্তার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কলসালটেন্ট অধ্যাপক আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা কতটা টেস্ট করছি। ইউকে তে প্রতিদিন দেড় লাখ টেস্ট করা হচ্ছে। ২৪ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ লকডাউন ছিল। আমরা এখনও জানি না আমাদের সোসাইটিতে কত মানুষ আক্রান্ত। এ জন্য করোনা থেকে মুক্তি পেতে হার্ড ইমিউনিটি দরকার। এ ছাড়া স্বাস্থ্যখাতে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে এবার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করোনা নিয়ে আমাদের প্রস্তুতির অভাব ছিল প্রথম থেকেই।
১২ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্ববাসীকে অ্যালার্ট করলেও আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নেয়নি। আমাদের দায়িত্ব ছিল সরকারকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া। সরকারকে সঠিক তথ্য না দিলে সমস্যা কমবে না বরং বাড়বে। একইসঙ্গে আমাদের টেস্ট, রেপিড টেস্ট বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র জনগোষ্ঠী এখনও ভয়াবহ বিপদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উপজেলাগুলোতে রোগী পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশে আরও ২-৩ বছর করোনা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিয়ে যারা দুর্নীতি করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। একইসঙ্গে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম টেস্ট হয়েছে বাংলাদেশে । আমাদের টেস্ট বাড়াতে হবে। এ ছাড়া করোনা টেস্টের জন্য বিশ্বের কোনো দেশ টাকা নেয়নি। কিন্তু আমাদের ২শ করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এটা ঠিক না।’
স্বাচিপের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ বলেন, ‘সারাবিশ্ব ক্রান্তিকাল সময় পার করছে। মানবসভ্যতার জন্য এটি মোকাবিলা করা একটি চ্যালেঞ্জ। সরকার প্রথম থেকে চিকিৎসা ক্ষেত্রকে প্রস্তুত করেছে। বৈশ্বিক নেতৃত্বে সরকার সমন্বয় করেছে। এ মুহূর্তে করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় আমরা ৮ম স্থানে। আমাদের এখন ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। প্রথমদিকে পিপিই সংকট ছিল সেটি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। প্রথমে কিছুটা করোনা মোকাবিলায় সমন্বয়হীনতা ছিল। দুযোর্গে এমনটা সাধারণত হয়ে থাকে। তবে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সমন্বয়হীনতা আছে। এটির সঙ্গে কয়েকটি মন্ত্রণালয় যুক্ত থাকায় লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাব ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে এখন সব ধরনের রোগী চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত আমাদেরকে করোনার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। করোনাাকে জয় করতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। উপসর্গ যাদের নেই তারা টেস্ট করাত যাচ্ছে না।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড ১৯ মুখপাত্র ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘যখন কোনো দুযোর্গ আসে তখন সবাই মিলে সেটির জন্য কাজ করে। শুরুতে আমাদের কিছু সমন্বয়হীনতা ছিল। পরবর্তীতে আমরা সেগুলো সমাধান করে একসঙ্গে কাজ করেছি। বর্তমানে আমরা রোগীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’