Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাঁধে ভাঙন, কুড়িগ্রামে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বানভাসীরা


১৬ জুলাই ২০২০ ২০:৫৯

কুড়িগ্রাম: ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ঘর-বাড়ি ও নলকূপ তলিয়ে থাকায় নদ-নদীর অববাহিকার আড়াই শতাধিক চর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। এ অবস্থায় সামান্য ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা সবার ভাগ্যে জুটছে না।

বন্যার পানির তোড়ে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার ভেঙে নতুন করে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের মশালের চর, বালাডোবার চর, ফকিরের চর, বতুয়াতলির চর, সাহেবের আলগা ইউনিয়নের জাহাজের চর, কাশিয়ার চর, চেরাগির চরসহ অন্যান্য দুর্গম চরাঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার মানুষজনের জীবন-যাপনের একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে নৌকা। ঘরের ভিতর এক গলা পানি এবং আশপাশে উঁচু বাঁধ বা শুকনো জায়গা না থাকায় তারা নৌকার মধ্যেই ছাগল, ভেড়া, হাড়ি, পাতিল নিয়ে দিনযাপন করছে। এসব এলাকার নলকূপ তলিয়ে থাকায় তারা বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছে। ঘরে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার না থাকায় তারা একবেলা খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন।

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চরের কলিমুদ্দিন জানান, এবারের বন্যায় ঘরে এক গলা পানি। চৌকি দড়ি দিয়ে ঘরের চালের সাথে বেঁধে রেখেছি। প্রায় ২০ দিন ধরে ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকলে এখন পর্যন্ত কোনো খাদ্য সহায়তা পাইনি।

মশালের চরের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, তার ওয়ার্ডের তিন শতাধিক পরিবার দীর্ঘ ২০/২১ দিন ধরে পানিবন্দি থাকলেও তাদের কোনো ত্রাণ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। সামান্য কিছু চাল ৩০ থেকে ৩৫টি পরিবারকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে এই মানুষগুলোর শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি জরুরি হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, বন্যা কবলিতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। গত ২০ জুন থেকে এ পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন শিশু।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, সরকারিভাবে বন্যা দুর্গতদের জন্য ১৬০ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং তা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১০১ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

টপ নিউজ ধরলার পানি বন্যা পরিস্থিতি বিপদসীমা ব্রহ্মপুত্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর