ঠাকুরগাঁও: অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাইভেটভাবে গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। ব্যাঙের ছাতার মতো শহর থেকে শুরু করে গ্রামেও গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন অসংখ্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের কিসামত তেওয়ারীগাঁও মুন্সিপাড়া মূল সড়কের পাশেই গড়ে ওঠা ‘জনসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ গিয়ে এমনই চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল। ক্লিনিক চালানোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই তাদের।
কিসামত তেওয়ারীগাঁও গ্রামের রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি পঞ্চগড়ের কিসামত হাজারী গ্রামের প্রতিমা রাণী (৩৬) সিজারজনিত সমস্যা নিয়ে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা চুক্তিতে ভর্তি হন জনসেবা ক্লিনিকে। চিকিৎসা শেষে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আরও মোটা অংকের টাকা দাবি করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।’
প্রতিমা রাণীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাথে ২ লাখ টাকার কথা হয়। কিন্তু রিলিজের সময় আরও ২ লাখ টাকা দাবি করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। শেষে ৪ লাখ টাকা দিয়ে রিলিজ নিতে হয়েছে।’
জনসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কৃষ্ণ রায়ের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি তার কিছুই দেখাতে পারেননি। উল্টো তিনি বলেন, ‘কাগজ দিয়ে সব হয় না, আমরা রংপুর মেডিকেলের ফেরত পাঠানো রোগীকেও ভালো করেছি।’
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র অনুযায়ী, জেলার ৫ উপজেলায় বর্তমানে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১১৪টি। যেখানে স্বাস্থ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত রয়েছে ৯০টি।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্লিনিকগুলো ভিজিট করা সম্ভব হয়নি। যে সমস্ত ক্লিনিকে অনিয়ম দেখা যাবে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন রোগীর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি রূপকথার মতো মনে হচ্ছে। সিজারজনিত সমস্যায় এতো টাকা রংপুর বিভাগের অত্যাধুনিক হাসপাতালগুলোতে নেওয়া হয় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’