Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই


১৭ জুলাই ২০২০ ০৯:২৪

ঢাকা: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, বরেণ্য শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই।

শুক্রবার (১৭ জুলাই) ভোরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ড. এমাজউদ্দীন।

বিএনপির নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মোহম্মদ রহমতউল্লাহ ও চেয়ারপারসনের প্রেসউইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার সারাবাংলাকে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন।

আবু নাসের মোহম্মদ রহমতউল্লাহ সারাবাংলাকে জানান, রাত আড়াইটার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় স্ট্রোক করেন প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। অবস্থার অবনতি হলে তখনই তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে ভোর পৌনে ৬টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এখন প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মরদেহ বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিনের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদাহ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের কিছু অংশ) জেলায়। বাবা সামসুদ্দীন আহমদ ছিলেন শিক্ষক, মা ছিলেন গৃহিণী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে বেড়ে ওঠা তার। শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজে পড়ালেখা করেছেন।

সরকারি কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু ড. এমাজউদ্দিনের। সত্তরের দশকে বৃত্তি নিয়ে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি অব অন্টারিও থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন। পরে বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। উপাচার্য হওয়ার আগে দুই মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিনি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি অবসরে যান। পরে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে (ইউডা) উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ড. এমাজউদ্দিন আহমদ আশির দশকে জার্মানির হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কলেজ ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র ফেলো ছিলেন। জাতিসংঘের ৪১ তম অধিবেশনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, পররাষ্ট্রনীতি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করেছেন। শিক্ষায় অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সরকার ড. এমাজউদ্দিনকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

অধ্যাপনার পাশাপাশি লেখালেখির জন্যও খুব পরিচিত ছিলেন ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে লিখেছেন পঞ্চাশটির বেশি বই। নিয়মিত কলাম লিখতেন। বিভিন্ন জার্নালে শতাধিক প্রবন্ধ রয়েছে তার নামে। ‘রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কথা’, ‘মধ্যযুগের রাষ্ট্র চিন্তা’, ‘তুলানামূলক রাজনীতি: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ’, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট’, ‘সমাজ ও রাজনীতি’, ‘গণতন্ত্রের ভবিষৎ’, ‘শান্তি চুক্তি ও অন্যান্য প্রবন্ধ’, ‘আঞ্চলিক সহযোগিতা, জাতীয় নিরাপত্তা’ তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই।

ড. এমাজউদ্দীন ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী রাজনীতি বিশ্লেষক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সাবেক ঢাবি উপাচার্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর