ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে বিশিষ্টজনদের শোক
১৭ জুলাই ২০২০ ১৮:১১
ঢাকা: খ্যাতিমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। শুক্রবার (১৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে তারা এ শোক জানান।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাত আড়াইটার (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত) দিকে স্ট্রোক করার পর রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ড. এমাজউদ্দীনকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৬টার দিকে মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন ৮৮ বছর বয়সী ড. এমাজউদ্দীন।
আরও পড়ুন- ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই
ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (একাংশ) সভাপতি আব্দুল করীম আব্বাসী, মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, খ্যাতিমান পণ্ডিত এবং আমাদের কালের সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ। তার মৃত্যুতে দেশ একজন বরেণ্য শিক্ষককে হারালো। কীর্তিমান ও পণ্ডিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন। গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে তার সুচিন্তিত ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে।’
আরও পড়ুন- ড. এমাজউদ্দীন গণতন্ত্রকামী মানুষের অভিভাবক ছিলেন: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাকে রাষ্ট্রশক্তির জুলুমও সইতে হয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের দাবির পক্ষে তিনি জাতীয় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই ক্রান্তিকালে তার মতো একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদের বেঁচে থাকা ছিল অত্যন্ত জরুরি।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র্র-সমাজে গণতন্ত্রের বিকাশের অপরিহার্যতা ছিল ড. এমাজউদ্দিন আহমদের চিন্তা, গবেষণা ও মননের অনুষঙ্গ। তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারবর্গ ও অসংখ্য গুণগ্রাহীর প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আমি মরহুম ড. এমাজউদ্দিন আহমদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।’
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক বলেন, ‘শুধু শিক্ষাবিদই নন, অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ একজন উদার গণতন্ত্রমনা বড় মাপের মানুষ ছিলেন। নিজস্ব রাজনৈতিক বিশ্বাস অটুট রেখেও যে প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনে দলীয় সংকীর্ণতাকে অতিক্রম করা যায়, ড. এমাজউদ্দিন আহমদ ছিলেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘খ্যাতিমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আজীবন কাজ করে গেছেন। তার মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ও বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে তার গবেষণা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে এবং থাকবে।’
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে দেশ একজন বরেণ্য শিক্ষককে হারালো। কীর্তিমান ও পণ্ডিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন। গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে তার সুচিন্তিত ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাকে রাষ্ট্রশক্তির জুলুমও সইতে হয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের দাবির পক্ষে তিনি জাতীয় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই ক্রান্তিকালে তার মতো একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদের বেঁচে থাকা ছিল জরুরি।’
আবদুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন জাতির সাহসী অভিভাবক। তিনি গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন, জাতিকে পথ দেখিয়েছেন। তার মৃত্যুতে জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক শক্তি একজন অভিভাবক হারালো।’
জেবেল রহমান গাণি ও এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘এমাজউদ্দিন আহমেদের মৃত্যু একটি নক্ষত্রের পতন হলো। তার মৃত্যুতে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হলো, তা অপূরণীয়। তিনি ছিলেন তার সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। দেশের মানুষের মুক্তি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তার কলম জাতিকে পথ দেখিয়েছে। তিনি মানুষের স্বাধীনতা আর অধিকারে বিশ্বাস করতেন।’
তারা আরও বলেন, ‘প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ শুধু শ্রেণিকক্ষের শিক্ষক ছিলেন না, তিনি শ্রেণিকক্ষের বাইরেও বৃহত্তর সমাজের একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি যে শিক্ষা দিয়েছেন, যেটি তিনি নিজে বিশ্বাস করতেন, চর্চা করতেন। একইসঙ্গে তার অনুজপ্রতীমদেরও দীক্ষিত করেছিলেন। তিনি সমতা ও অর্থনৈতিক মুক্তিতে বিশ্বাস করতেন।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা এক শোকবার্তায় বলেন, ‘ড. এমাজউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে দেশ একজন বরেণ্য শিক্ষক হারালো। কীর্তিমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন। গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে তার সুচিন্তিত ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে। বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের দাবির পক্ষে তিনি জাতির অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই ক্রান্তিকালে তার মতো একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদের বেঁচে থাকা জরুরি ছিল।’
আবদুল করিম আব্বাসী জেবেল রহমান গাণি ড. এমাজউদ্দীন ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ড. এমাজউদ্দীনের মৃত্যু ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বিশিষ্টজনদের শোক মির্জা ফখরুল মোস্তফা জামাল হায়দার শাহাদাত হোসেন সেলিম শোকবার্তা