বাস্তবায়নে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ, প্রকল্পে গতি বাড়ানোর তাগিদ
২১ জুলাই ২০২০ ১৬:৫৫
ঢাকা: প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত সময় তো বটেই, দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও সড়ক উন্নয়নের দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারায় ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা দূর করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) প্রকল্প দুইটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে। এসময় প্রধানমন্ত্রী সংশোধনী প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দিতে গিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া জানান। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন- একনেকে ১১শ’ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, খুলনা শিপইয়ার্ডের সড়ক প্রশস্ত ও উন্নয়ন করার প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০১৩ সালে, ২ বছর মেয়াদে। সাত বছর পর এসে প্রকল্পটির অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ। প্রকল্পটি শেষ করতে আরও দুই বছর সময় চাওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় বেড়েছে ১০৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আরেক প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ থেকে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দেড় বছর মেয়াদে হাতে নেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর প্রকল্পের মেয়াদ আরও আড়াই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যয়ও বেড়েছে ১১৪ দশমিক ২০ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, নারায়ণগঞ্জের প্রকল্পটিতে মূল কাজের বাইরে বাংলো বা টুরিস্টদের জন্য হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল কাজটাই করুন। অর্থাৎ রাস্তা প্রশস্ত করুন, ঘাটলা নির্মাণ করুন। চায়ের দোকান বা অন্য দোকান বসানোর প্রয়োজন হলে বেসরকারিভাবে ব্যবসায়ীরাই সেটা করবেন। এছাড়া খুলনা শিপইয়ার্ডের সড়ক প্রশস্ত করা প্রকল্প নিয়েও ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পটি রিভিউ করতে নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনকে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অনেক সময় প্রকল্প চলাকালীন ‘আইডিয়াওয়ালা’রা এসে নতুন নতুন আইডিয়া যোগ করেন প্রকল্পে। এটা আর করা যাবে না।
এদিকে, খুলনা শিপইয়ার্ডের সড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরে বিশেষ সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে ১২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা করা হয়। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১০৪ শতাংশ বা ১৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, সড়কের ডিজাইন পরিবর্তন, সর্বশেষ রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন, নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি ও মেয়াদ বৃদ্ধি— এই পাঁচ কারণে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘লাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ থেকে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে ১১৪ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া প্রকল্পের মূল অনুমোদিত মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। এরই মধ্যে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই একবছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এতেও কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এখন নতুন করে আড়াই বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
একনেক বৈঠক প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতি প্রকল্পে গতি বাড়ানোর তগিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ