ঢাকা: গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর জনগণের ভাগ্য ছেড়ে দিলে তাকে জনগণকে ভুগতে হয়— করোনাভাইরাস সংকট এ কথাকে প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেন, গোটা বিশ্ব ও বাংলাদেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছে। এই করোনাভাইরাস সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে— পুঁজিবাদ, মুক্তবাজার অর্থনীতি ও গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থার হাতে জনগণের ভাগ্য ছেড়ে দেওয়া যায় না।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার, জাসদ নেতা ও সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমকে হত্যার ৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কর্নেল তাহের মিলনায়তনে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসানুল হক ইনু। সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার ও স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী।
সভাপতির বক্তব্যে ইনু বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতি-পুঁজিবাদ এগুলো শুধু মুনাফা বোঝে, মানুষ বোঝে না। মানুষকে অবহেলা, সমাজে বৈষম্য ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মুক্তবাজার অর্থনীতি দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা উৎপাদন-পুনরুৎপাদনের কারখানা। জাসদ তাই গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন ও দুর্নীতি-বৈষম্যের অবসানের লক্ষ্যে এবং সুশাসন-সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম করছে। রাষ্ট্রব্যবস্থাকে গণমুখী ও মানবিক করার সংগ্রাম করছে।
তিনি বলেন, আজ সময় এসেছে সংবিধানও পর্যালোচনা করা। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সর্বজনীন শিক্ষা, সর্বজনীন খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালুর কোনো বিকল্প নেই।
জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, মহান দেশপ্রেমিক, মৃত্যুঞ্জয়ী বীর ও পঁচাত্তরের সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমকে আজ থেকে ৪৪ বছর আগে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান মিথ্যা সাজানো মামলায় প্রহসনমূলক বিচারে ফাঁসি দিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছিল। অথচ কর্নেল তাহের গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তন করে সামজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে জাসদে যোগ দিয়েছিলেন।
ইনু আরও বলেন, কর্নেল তাহের যেমন মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, ঠিক তেমন পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর জাতির সংকটকালে সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণবিরোধী রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনের বিপ্লবী প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। জাসদ আজও সেই লক্ষ্যেই রাজনীতি করছে।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জাসদের সহসভাপতি মীর হোসাইন আখতার, আফরোজা হক রীনা, নুরুল আখতার, সফি উদ্দিন মোল্লা, শ্রমিক জোটের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম, রোকনুজ্জামান রোকন, মো. মোহসীন, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী সালমা সুলতানা, সদস্য এ বি এম জাকিরুল হক টিটন, সহদফতর সম্পাদক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ সুমনসহ অন্যরা।
এর আগে কর্নেল তাহেরের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় নারী জোটের আহ্বায়ক আফরোজা হক রীনা, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার খোরশেদ; জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন ও সহসভাপতি কাজী সালমা সুলতানা; জাতীয় কৃষক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ফসি, জাসদ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আহসান হাবীব শামীম, সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হক ননী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল রাজ বংশীসহ অন্যরা।