Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রথম চালান ত্রিপুরায় যাবে বৃহস্পতিবার, দেশের আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা


২২ জুলাই ২০২০ ২০:২০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যের জন্য আসা পণ্যবোঝাই চারটি কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাসের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আগরতলায় আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষামূলক ট্রান্সশিপমেন্টের প্রথম চালান গ্রহণ করবেন।

এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতে পাঠানো প্রথম চালান থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। সরকারি বিভিন্ন মাশুল এবং বেসরকারি খাতে জাহাজ ও পরিবহনের ভাড়া থেকে এই টাকা আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও শিপিং এজেন্ট সংশ্লিষ্টরা। তবে এর সঙ্গে প্রায় লাখখানেক টাকার মতো খরচও যুক্ত হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- দেশের সড়ক-বন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য পরিবহন, আশাবাদী ব্যবসায়ীরা

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ভোরে ভারতের উত্তর-পূবাঞ্চলীয় রাজ্যের জন্য চারটিসহ মোট ২২১টি কনটেইনার নিয়ে কোলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে আসে বাংলাদেশি এমভি সেঁজুতি জাহাজ। দুপুর ১টার দিকে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে ভেড়ার পর সন্ধ্যার দিকে কনটেইনার খালাস শুরু হয়।

জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট ম্যাঙ্গো শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, চারটি কনটেইনার নিয়ে ভাড়া করা চারটি প্রাইম মোভার মঙ্গলবার রাত ২টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা দেয়। এর আগে কনটেইনারগুলো স্ক্যানিং করা হয়। বন্দর ও কাস্টমসের নির্ধারিত মাশুল আদায়ের পর জাহাজটি বন্দর থেকে বের হয়। মহাসড়কে কয়েকদফা চেকিং ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রাইম মোভারগুলো আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রাইম মোভারগুলো সীমান্ত পার হয়ে আগরতলায় পৌঁছবে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে ট্রান্সশিপমেন্টের প্রথম চালান গ্রহণ করবেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকতাও থাকছে। চারটি কনটেইনারের দু’টিতে রড এবং অন্য দু’টিতে ভোগ্যপণ্য মসুর ডাল আছে। রডের চালান নেওয়া হবে পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়ায়। চালানটি ভারতের এস এম করপোরেশনের। এছাড়া ডালের চালান নেওয়া হবে আসামের করিমগঞ্জে জেইন ট্রেডার্সের কাছে।

এদিকে, ভারতের পণ্যবোঝাই চার কনটেইনার থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ছয় খাতে এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ পাঁচ খাতে মাশুল আদায় করেছে। দুই সংস্থার আদায় করা মাশুলের পরিমাণ ৪৩ হাজার ৯৯৯ টাকা। আর জাহাজ ও পরিবহন ভাড়াসহ আদায় হয়েছে আরও প্রায় তিন লাখ টাকা।

আরও পড়ুন- কলকাতার পণ্য নিয়ে চট্টগ্রামে জাহাজ, সড়কে যাবে ত্রিপুরা-আসাম

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আদেশ অনুযায়ী, প্রতি চালানের প্রসেসিং মাশুল ৩০ টাকা, প্রতি টনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট মাশুল ২০ টাকা, নিরাপত্তা মাশুল ১০০ টাকা, এসকর্ট মাশুল ৫০ টাকা, কনটেইনার স্ক্যানিং মাশুল ২৫৪ টাকা ও অন্যান্য প্রশাসনিক মাশুল ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দু’টি চালানে চারটি কনটেইনার এসেছে। আমরা ছয় খাতে ১৩ হাজার ১০০ টাকা মাশুল পেয়েছি। দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী এনবিআর যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, সেভাবে মাশুল আদায় করা হয়েছে।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিকল্পনা ও প্রশাসন) মো. জাফর আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘হ্যান্ডলিং, ক্রেন চার্জ, রিভার ডিউজ, সিএন্ডএফ’র মাশুল ও ভ্যাটসহ আমরা পেয়েছি ৩০ হাজার ৮৯৯ টাকা। জাহাজ এবং পরিবহনের যে ভাড়া, সেগুলো আলাদা। শিপিং এজেন্ট ও ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি সেগুলো আদায় করেছে।’

ম্যাঙ্গো শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমুদ্রপথে চার কনটেইনার পণ্য পরিবহনের জন্য জাহাজের ভাড়া বাবদ দেড় লাখ টাকা এবং সঙ্গে আনুষাঙ্গিক আরও ৩০ হাজার টাকার মতো চার্জ পাওয়া গেছে। প্রতিটি প্রাইম মোভার আগরতলা পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের জন্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করেছে। সে হিসেবে পরিবহন সংস্থা পেয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। সব মিলিয়ে তিন লাখ টাকার মতো আয় হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ট্রান্সশিপমেন্টের ট্রায়াল রান হওয়ায় সড়ক-মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের প্রশাসনিক ভাড়া আদায় করা হয়নি।

২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহনের চুক্তি হয়। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠকে এ সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতি সই হয়। এর ৯ মাস পর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা প্রথম চালান যাচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে।

জাহাজ ট্রান্সশিপমেন্ট ত্রিপুরা ও আসাম পণ্যবাহী কনটেইনার ভারতের পণ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর