ঢাকা: ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর গরুর হাটগুলোর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য্যরাও প্রস্তুত রয়েছে। গরুর হাটকেন্দ্র্রিক ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ঠেকাতে র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা নজরদারি শুরু করেছে। পোশাকে ও সাদা পোশাকে তারা এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২২ জুলাই) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, রাজধানীতে যেকটি গরুর হাট বসবে এর প্রত্যেকটিতে গোয়েন্দা সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা গরুর হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বিধানে কাজ করবে। বিশেষ করে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে তারা কাজ করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতিকালে পল্লবী এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, মূলত তারা গরুর হাটকেন্দ্রিক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এরকম আরও অনেক ছিনতাইকারী রাজধানীর গরুর হাটকেন্দ্রিক বিশৃঙ্খলা করতে পারে সেজন্য ডিবি পুলিশ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে।
ডিবি পূর্ব বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিবির কয়েকটি দল বাজারে জালটাকা সরবরাহকারীদের চিহ্নিত করার কাজ নজরদারি করছে। সম্প্রতিকালে বাজারে ৭০ লাখ টাকার মতো জালটাকা ছড়িয়ে দিয়েছে, আর ওইসব টাকা গরুর হাটে লেনদেন করা হবে, গ্রেফতারদের এমন তথ্যের ভিত্তিতে সক্রিয় হয়েছে ডিবি পুলিশ।
জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃঞ্চপদ রায় বলেন, পশুর হাট গুলোতে ডিএমপির পক্ষ থেকে নজরদারি থাকবে। পেট্রোল টিমের টহল থাকবে সার্বক্ষণিক। ছিনতাইকারী প্রতিরোধে নেওয়া হয়েছে ভিন্ন কৌশল। গরু ব্যবসায়ীদের টাকা বহনে মানি স্কট টিমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া জালটাকা শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো থাকবে।
তিনি আরও বলেন, গরুর হাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে কি না সে বিষয়েও হাট ইজারাদারের ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
এদিকে র্যাবের পক্ষ থেকেও গরুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। রাজধানীতে চারটি ব্যাটালিয়ন গরুরহাট গুলোতে নিরাপত্তার কাজে অংশ নেবে। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে র্যাব সদস্যরা হাটে মনিটরিং করবেন।
জানতে চাইলে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে র্যাবের টিম কাজ করছে। হাটে গরু বিক্রি করে চাষী ও ব্যাপারীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়েন্দা সদস্যরা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।
অন্যদিকে রাজধানীর বাইরে অন্যান্য জেলাগুলোতেও গরুর হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গরু বেচা-কেনা কেন্দ্রিক নিরাপত্তায় কাজ করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে মেট্রোপলিটন এলাকার ও জেলা শহরের হাটগুলোতে। সেখানে মানি স্কট থেকে শুরু করে জাল টাকা শনাক্ত করণের জন্যও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর ডাকাত ও ছিনতাইকারী প্রতিরোধে আগে থেকেই র্যাব ও পুলিশ কাজ করছে। মূল উদ্দেশ্য হলো একজন কৃষক বলা ব্যবসায়ী তার পশুটি বিক্রির পর যেন টাকাসহ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন।