সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা গোপন: ৩ চীনা নাগরিক আমেরিকায় গ্রেফতার
২৪ জুলাই ২০২০ ০৯:২৯
চার চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে নিজেদের ভিসায় সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা চীনের সামরিক বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিলেও ভিসা সম্পর্কিত সব জায়গায় এ তথ্য গোপন করেছেন ও নিজেদের পরিচয়ের মিথ্য তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চতুর্থ জনকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে এফবিআই। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটে অবস্থান করছেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও সেটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই— যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি শহরে এমন ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিনিদের এসব অভিযোগকে ‘ক্ষতিকর ও মানহানিকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
.@SecPompeo: We, the free nations of the world, must induce change in the Chinese Communist Party’s behavior in more creative and assertive ways, because Beijing’s actions threaten our people and our prosperity. pic.twitter.com/nFG6VB5BiV
— Department of State (@StateDept) July 23, 2020
মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, সামরিক বাহিনীর বিজ্ঞানীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে চীনের পরিকল্পনার অংশ এটি। মার্কিন অ্যাটর্নি জন সি ডেমারস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, চীনের সামরিক বাহিনী পিপল’স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সদস্যরা গবেষণা কাজের উল্লেখ করে ভিসা আবেদন করেছে, কিন্তু সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তাদের ‘প্রকৃত সম্পর্ক’ গোপন করেছে। এর মাধ্যমে মার্কিনিদের ‘উন্মুক্ত’ সমাজ ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটে চীনের একজন বিজ্ঞানী আশ্রয় নিয়েছেন— যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এমন ঘোষণার পরই তিন জনকে গ্রেফতারের তথ্য বেরিয়ে এলো। এর মধ্যে একদিন আগেই হস্টনে চীনা মিশনের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণাও এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগে মিশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার তিন চীনা নাগরিককে গ্রেফতারের ঘোষণার আগে অবশ্য চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন যুক্তরাষ্ট্রের আনা অভিযোগকে ‘ক্ষতিকর ভিত্তিহীন’ অভিযোগ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, চীন অবশ্যই প্রয়োজনীয় জবাব দেবে এবং বৈধ অধিকার সুরক্ষায় সবকিছুই করবে।
যে চার চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হচ্ছে তারা হলেন— ওয়াং শিন, সং চেন, ঝাও কাইকাই ও ট্যাং জুয়ান। এর মধ্যে ট্যাং সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকি তিন জনের মধ্যে ওয়াং শিনকে লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদের পর গত ৭ জুন গ্রেফতার করা হয়। বিচার বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ওয়াং বলেছিলেন যে ২০১৬ সালে তিনি চীনা সামরিক বাহিনী ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তিনি এখনো চীনা সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং সামরিক বাহিনীর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে কাজ করেন।
এদিকে, সং চেন ও ঝাও কাইকাইকে ১৮ জুলাই গ্রেফতার করা হয়। তারা দু’জনও চীনা সামরিক বাহিনীতে কাজ করার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি মার্কিনিদের।