‘ড. এমাজদ্দীনের কর্ম জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সাহস জোগাবে’
২৫ জুলাই ২০২০ ০০:৩৯
ঢাকা: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রয়াত অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের কর্ম জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সাহস জোগাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৪ জুলাই) বিকেলে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রয়াত এমাজদ্দীন আহমদের স্মরণে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি কমিউনিকেশন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আমাদের মাঝে নেই। আর ফিরেও আসবেন না। কিন্তু তার কাজ আমাদের মধ্যে রয়ে গেল। তার চিন্তা, তার বিশ্বাস, তার কাজ আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করবে, সাহস জোগাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের একজন দৃঢ় প্রবক্তা, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের একজন অতন্দ্র প্রহরী, গণতন্ত্রের একজন সাহসী বলিষ্ঠ সংগ্রামী যোদ্ধা প্রফেসর এমাজউদ্দীন আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন এবং জোগাবেন। তিনি আমাদের সাহস জোগাবেন লড়াই করতে, সংগ্রাম করতে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে।’
ড. এমাজউদ্দীন আহমদকে খালেদা জিয়া অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উদার গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আমাদের পথ দেখাবেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মানুষ তার কাছে ঋণী থাকবে। আমি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, আমাদের চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তার রাষ্ট্রচিন্তা ছিল দেশ, সমাজ, জাতি, রাজনীতি, গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এর সমন্বয়ই তার চিন্তা-চেতনা। এগুলোকে সমন্বয় করে তিনি তার বইগুলো রচনা করেছেন, পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘যে সময়ে যা প্রয়োজন পরামর্শ দেওয়ার, সেই সময়কে ধারণ করে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সেই সময় জাতির জন্য কী করা প্রয়োজন, সরকারের কী করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক দলগুলোর কী করা প্রয়োজন— সেগুলোর ব্যাপারে তিনি নীতিনির্ধারণী জ্ঞানগর্ব বক্তব্য দিয়েছেন, কলাম লিখেছেন, বই রচনা করেছেন।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এমাজউদ্দীন আহমদ একজন নিবেদিত জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বাংলাদেশে অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন, বুদ্ধিজীবীর অভাব নেই। কিন্তু তার মতো উঁচু মানের বুদ্ধিজীবী এখন খুব বিরল, নেই বললেই চলে।’
তিনি বলেন, ‘এমাজউদ্দীন আহমদ গত ১৩ বছর মনের মধ্যে অনেক দুঃখ নিয়ে বেঁচে ছিলেন। গণতন্ত্রের প্রতি তার একটা কমিটমেন্ট ছিল। এখন ব্র্যাকডাউন অব ডেমোক্রেসির জন্য মিলিটারি ইন্টারভেনশনের দরকার নেই, রাস্তায় কোনো ট্যাংক নামানোর দরকার নেই, কোনো গোলাবারুদের দরকার নেই, কোনো মার্শাল ল’ জারি করার দরকার নেই। এখন ব্যালট বাক্স ব্যবহার, ভোটকে ব্যবহার করে, গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী সরকার, স্বৈরাচারি সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এই যে গণতন্ত্রের মৃত্যু হচ্ছে ধীরে ধীরে— এ জন্যই তিনি মনের মধ্যে একটা দুঃখবোধ নিয়ে চলে গেছেন বলে আমি মনে করি।’
অনলাইন সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরুদ্দীন সরকার, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ও শত নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।
গত ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের সাবেক উপাচার্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপি কমিউনিকেশন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর