‘আগস্টের প্রথম সপ্তাহের পর বন্যার পানি নেমে যাবে’
২৫ জুলাই ২০২০ ১৫:৪১
ঢাকা: আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের পর দেশের সব জায়গা থেকে বন্যার পানি নেমে যাবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
শনিবার (২৫ জুলাই) সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এনামুর রহমান বলেন, ‘২৬ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়, ১১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়ে এবং ২১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফায় পানি বাড়ছে। তবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে পানি নামতে শুরু করবে।’
দেশের ১৬টি জেলায় আরও দুদিন বন্যার পানি বাড়বে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২৭ জুলাই পর্যন্ত পানি বাড়ার পর আস্তে আস্তে কমতে শুরু করবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে সুমদ্রে জোয়ার থাকলে মধ্যাঞ্চলের পানি কমতে বিলম্বিত হতে পারে। জোয়ার না থাকলে হয়তো আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের সব জায়গা থেকে পানি নেমে যেতে পারে।’
এছাড়া মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, ঢাকা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নাটোর, বগুড়া, জমালাপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল এবং নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও দুদিন অবনতি হবে, তারপর পানি কমতে থাকবে বলেও জানান তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যা পূর্বাভাসকেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে, এটা কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি কমছে। ঢাকা জেলার আশপাশের নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্রাণ কার্যক্রম মনিটরিং করবে ছয়টি নতুন কমিটি। আগামী ২১ দিন তারা এই দায়িত্ব পালন করবে। এরা মাঠ পর্যায়ের যেকোনো সমস্যা সমাধান করবেন এবং যেকোনো চাহিদা পূরণে আমাদের জানাবে, আমরা সে অনুযায়ী বরাদ্দ দেব।’
তিনি বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য গত ২৮ জুন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ৫২ হাজার ১০ টন চাল, ১ লাখ ২১ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট, গো-খাদ্য কিনতে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং শিশুখাদ্য কিনতে আরও ৭০ লাখ টাকা দিয়েছি। কয়েক জায়গায় ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে, সেগুলো নির্মাণের জন্য ৩ শ বান্ডিল টিন এবং ৯০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।’
দেশে ৩১টি জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৪৭টি উপজেলায় ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৮ শ পরিবারের ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’ এছাড়া ১ হাজার ৫১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, সেখানে ৮৮ হাজার ৬২ জন আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানান এনামুর রহমান।
দেশের কোথাও কোনো ত্রাণের সংকট নেই জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বন্যাকবলিত দেশবাসীকে জানাতে চাই- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে সব সময় আছেন। তিনি সবসময় আমাদের কার্যক্রম তদারকি করছেন, আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, আমরা তার নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কাছে যেমন পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে, তেমনি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও পর্যাপ্ত মজুত আছে।’